স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশে জুয়া নিয়ে যে আইনটি বলবত রয়েছে তা দেড়শ বছরের পুরনো। তাতে ক্যাসিনোর বিষয়ে কোন কিছুই উল্লেখ নেই। জুয়ার বিষয়ে যে আইনটি কার্যকর আছে সেটি হলো ‘প্রকাশ্য জুয়া আইন ১৮৬৭’, সেখানে অবশ্য ক্যাসিনো বিষয়ে কিছু বলা নেই। সম্প্রতি ক্যাসিনো মালিকদের গ্রেফতারের পর বিষয়টি সামনে এসেছে।
তবে ওই আইনে বলা হয়েছে, ‘কেউ তার ঘর, তাঁবু, কক্ষ, প্রাঙ্গণ বা প্রাচিরবেষ্টিত স্থানের মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবহারকারী হিসাবে যে কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে স্বেচ্ছায় অন্য লোককে, উক্ত স্থানকে সাধারণ জুয়ার স্থান হিসাবে ব্যবহৃত করিতে দিলে অর্থদন্ড ও কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।’
১৯৭২ সালের সংবিধানে জুয়া বন্ধের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশনা দেয়া আছে। যদিও পরবর্তীকালে এ বিষয়ে আর নতুন কোনো আইন হয়নি, তাই এখনো কার্যকর রয়ে গেছে দেড়শ’ বছরের বেশি পুরনো একটি আইন।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট (২০১৬) অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের বলেন, বর্তমান সময়োপযোগি আইনের খুব দরকার।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাতে জানা যাচ্ছে ঢাকায় অন্তত ষাটটি ক্যাসিনোর অস্তিত্ব রয়েছে।
পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আশপাশের দেশ সিঙ্গাপুর, ম্যাকাও, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এমনকি নেপালেও জুয়া খেলার জায়গা হিসেবে ক্যাসিনোর জনপ্রিয়তা আছে।
কিন্তু বিভিন্ন ক্লাবে বা আড্ডায় গোপনে জুয়াখেলার অনেক আসর বসার কথা নানা সময়ে শোনা গেলেও একেবারে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণসজ্জিত এই ক্যাসিনোগুলোর অস্তিত্ব থাকবার খবর বাংলাদেশের মানুষের কাছে একেবারেই নতুন।
অথচ মদ বিক্রি বা পানের মতো ক্যাসিনোর অনুমোদন বা লাইসেন্স দেয়ার কোনো ব্যবস্থা বা সুযোগই বাংলাদেশের কোন আইনে নেই। এ বিষয়ে বলছেন বিশিষ্ট আইনজীবী জোতির্ময় বড়ু–য়া। তিনি বলেন, এমনকি তাস, পাশা, কাউন্টার অর্থ বা অন্য যে কোনো সরঞ্জামসহ যে কোনো ব্যক্তিকে ক্রীড়ারত বা উপস্থিত দেখতে পাওয়া গেলেও শাস্তি দেয়ার সুযোগ আছে এই আইনে।
মি. বড়ুয়া বলছেন ঢাকায় বছরের পর বছর ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে সবার নাকের ডগাতেই এসব চলেছে, কিন্তু অন্য অনেক বিষয়ের মতো এখানেও আইনের প্রয়োগ ছিলো না।
তিনি বলেন, ‘‘কিছু মানুষকে অভিযানে আটক করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। কিন্তু জুয়া খেলার মেশিনগুলো কারা আমদানির অনুমতি দিয়েছে? কোন আইনে দিয়েছে? রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস কোন আইনে এগুলো আনার অনুমতি বা ছাড় দিয়েছে? কিভাবে পরিবহন হলো? কারা সহযোগিতা করেছে আর কারা কোন আইনে লাভবান হয়েছে -এগুলোও খুঁজে বের করা উচিত’’।