তাহমিম আল আশিক:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে ক্যাসিনো ব্যবসা সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেলিম প্রধানকে আটকের পর অনলাইন ক্যাসিনোর বিষয়টি সামনে এসেছে। এ ক্যাসিনো কীভাবে চলত, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিস্তারিত জানায় র্যাব।
প্রথমে একজন জুয়াড়িকে মোবাইলে টি-২১ ও পি-২৪ নামের দুটি অ্যাপস ডাউনলোড করতে হতো। পরে অ্যাপসগুলো থেকে তাঁর পছন্দমতো গেম বাছাই করতেন। এরপর শুরু হতো খেলা। জিতলে টাকা জমা হতো জুয়াড়ির নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, আর হারলে টাকা কাটা যেত ওই একই অ্যাকাউন্ট থেকে। এভাবেই অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান।
র্যাব-১–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম অভিযান শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সারওয়ার বিন কাশেম জানান, অনলাইনে ক্যাসিনো কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আগে প্রত্যেক জুয়াড়িকে নির্দিষ্ট ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হতো। এখন পর্যন্ত এমন তিনটি ব্যাংকের নাম জানতে পেরেছে র্যাব। ব্যাংকগুলো হলো যমুনা ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিলং ব্যাংক। অ্যাকাউন্টগুলোয় নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখতে হতো। খেলায় জিতলে বা হারলে ওই অ্যাকাউন্টে টাকা যোগ হতো বা কাটা যেত। সম্পূর্ণ লেনদেন হতো একটি গেটওয়ের মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত একটি গেটওয়েরই সন্ধান পেয়েছে র্যাব। সন্ধান পাওয়া ওই গেটওয়েতে কেবল এক মাসেই প্রায় নয় কোটি টাকা জমা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আরও গেটওয়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সেলিমের দুই সহযোগী আখতারুজ্জামান ও রোকন লেনদেনের এই টাকা হয় নগদে তুলে নিতেন, নয়তো বিদেশে পাঠিয়ে দিতেন।
অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার এই পুরো কার্যক্রমে সেলিম প্রধানের একজন ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। র্যাব জানিয়েছে, ওই ব্যবসায়িক অংশীদারের নাম মি. দো। তিনি উত্তর কোরিয়ার নাগরিক। জুয়াড়িদের থেকে যে টাকা পাওয়া যেত, সেগুলো সেলিম প্রধান ও দোর মধ্যে সমানভাবে ভাগ হতো। দোর সঙ্গে সেলিম প্রধানের পরিচয় হয় থাইল্যান্ডে। ১৯৭৩ সালে ঢাকায় জন্ম নেওয়া সেলিম তাঁর ভাইয়ের সহযোগিতায় জাপান চলে যান। জাপানে গিয়ে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। এরপর জাপান থেকে চলে যান থাইল্যান্ডে। সেখানে গিয়ে শিপ ব্রেকিংয়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেখানেই দোর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। পরিচয়ের পর দো সেলিম প্রধানকে অনলাইনে গেমিং সাইট খোলার পরামর্শ দেন।