তাহমিম আল আশিক:
বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্যে চারদিনের সফরে ভারতে অবস্থান করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী৷ এসময় ২ই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে । যার মধ্যে অন্যতম ফেনী নদীর পানি চুক্তি ।যদিও বাঙ্গালির আশার কেন্দ্রবিন্দু তিস্তা নিয়ে কোন আলোচোনা হয় নি ।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে ত্রিপুরায় নিতে পারবে ভারত। শনিবার দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। ইউএনবির খবরে বলা হয়, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত। এই পানি তারা ত্রিপুরা সাব্রুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে। ফেনী নদী,অভিন্ন নয়-শুধুই বাংলাদেশের সম্পদ। এর উৎপত্তি, প্রবাহ এবং ভৌগলিক অবস্থান নিশ্চিত করে ফেনী নদী কোনভাবেই আন্তর্জাতিক নদী প্রবাহের সীমা রেখায় প্রবাহিত নয়। দেশি-বিদেশি যারাই ফেনী নদীকে অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদী প্রমাণের চেষ্টা করছেন বহু বছর ধরে,তারা কখনই মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করে এর পক্ষে যুক্তি দেখাতে পারেননি। লেখালেখি বা বক্তব্য-বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ তাদের অপচেষ্টা। সেখানেও তারা কোনভাবেই দু’দেশের অমিমাংসিত ভূমি নিয়ে কথা বলেন না। খাগড়াছড়ির ১৭শ একর অমিমাংসিত বাংলাদেশের যে ভূমির উপর দিয়ে এ নদী প্রবাহিত,তা ভারতের বলেই চালিয়ে দিতে চেষ্টা করেন অনেকে। শুধু তাই নয়,পার্শ্ববর্তী বন্ধু প্রতিম দেশ ভারতও নিজেদের উত্তর-পূর্ব অংশের বেশ কটি রাজ্যের পানির অভাব মেটাতে দীর্ঘ বছর ধরে নানা কৌশলে ফেনী নদীকে আন্তর্জাতিক নদী প্রমাণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। উৎপত্তি এবং পথচলা: এক পাশে পার্বত্য রামগড় ও চট্টগ্রামের মিরসরাই, আরেক পাশে ফেনীর ছাগলনাইয়া। মাঝে কল কল ধ্বনিতে ধেয়ে চলছে ছাগলনাইয়ার গর্বের সন্তান, ফেনী নদী। খাগড়াছড়ি’র পার্বত্য মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির মধ্যবর্তী “ভগবান” টিলা থেকে ছড়া নেমে আসে ভাটির দিকে। আর আসালং-তাইন্দং দ্বীপ থেকে রূপ নেয় ফেনী নদী নামে। ভগবানটিলার পর আসালং তাইন্দং এসে প্রাকৃতিকভাবে প্রবাহিত ছড়াকে কেটে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আমলীঘাট সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের লুসাই পাহাড় থেকে ছড়া নেমে এসে, ইজেরা গ্রামের সীমান্ত ছুঁয়ে বা ঘেঁষে ফেনী নদী নামে ভাটির দিকে ধেয়ে গেছে। প্রকৃত অর্থে এই তথ্যটি সর্ম্পূণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ ইজেরা গ্রামের সাথে আসালং-তাইন্দং এ বাংলাদেশের প্রায় ১৭শ একর জায়গার সম্পর্ক রয়েছে। যা ভারত গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে। আসালং তাইন্দং থেকে নেমে আসা ছড়া আমলীঘাটের এখানটাতেই ছাগলনাইয়া ছুয়ে ফেনী নদী নামে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিলেছে। ফেনী নদী নিয়ে বিতর্কের শুরু : দেশ বিভাগের আগে ১৯৩৪ সালে ভারত, ফেনী নদীর পানি নেয়ার দাবি ওঠায় বলে কেউ কেউ মন্তব্য করলেও মূলত: ১৯৫৮ থেকে ১৯৬০ সাল পযর্ন্ত নানা কৌশলে “নো ম্যানস ল্যান্ড” ও “ট্রান্সবাউন্ডারির” অজুহাতে আর্ন্তজাতিক নদী প্রবাহের অংশ দেখানোর চেষ্টা করে তারা। ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে ক্ষয়ক্ষতি: এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেয়া হলে শুষ্ক মৌসুমে নদী তীরবর্তী চট্টগ্রামের মিরসরাই,খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা, ফেনীর ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, সোনাগাজী, মুহুরী সেচ প্রকল্প, ফুলগাজী, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দক্ষিণাংশ এবং নোয়াখালী-লক্ষীপুরের কিছু অংশের বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে পানির জোগান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এতে করে লাখ লাখ হেক্টর জমি চাষাবাদের অনাবাদি হয়ে পড়বে। অকার্যকর হয়ে পড়বে ১৯৮৪ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের হাত ধরে তৎকালীন ১৫৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প “মুহুরী”। যার আওতায় এ অঞ্চলের প্রায় ১৪ থেকে ১৫টি উপজেলার ৮/৯ লাখ হেক্টর জমিতে লোনামুক্ত পানির সরবরাহ করা হয়। যার মাধ্যমে শুধুমাত্র ফেনীর ৬টি উপজেলায় বছরে অতিরিক্ত প্রায় ৮৬ হাজার মেট্টিকটন ফসল উৎপাদন হয়। এ প্রকল্পের আওতায় যেখানে ফেনী, মুহুরী ও কালিদাস পাহালিয়া- এ তিনটি নদীর পানি দিয়ে ৮/৯ লাখ হেক্টর জমির সেচকাজ করার কথা, সেখানে এখনই শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে ২৩ হাজার হেক্টর জমিতেও সেচ দেয়া সম্ভব হয় না। মুহুরী সেচ প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ পানির মূল উৎস “ফেনী নদী”। ফেনী থেকে ২৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে ৭০ কিলোমিটার এবং সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-ফেনী জেলার সীমানায় মুহুরী সেচ প্রকল্পটির অবস্থান। এখানে গড়ে ওঠা দিগন্ত বিস্তৃত চিংড়ি ঘেরগুলো ধংস হবে। মুহুরী, সিলোনিয়া, পিলাকসহ প্রায় শতাধিক ছোট-বড় নদী, খাল ও ছরায় পানি শূন্যতা দেখা দেবে। এক দশক আগ থেকেই ছাগলনাইয়া উপজেলার যশপুর খাল, ছাগলনাইয়া ছড়া, ফুলছড়ি খাল, হিছাছড়া,মন্দিয়া খাল,জংগলমিয়া খাল,পান্নাঘাট খালসহ অসংখ্য খালের তলা শুকনো মওসুমে পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এছাড়া মুহুরী প্রকল্পের নয়নাভিরাম পর্যটন সম্ভাবনা হারিয়ে যাবে নিমিষেই। হুমিকর মুখে পড়বে কয়েক লক্ষ হেক্টর জমির গাছপালা। ফেনী নদী, মুহুরী ও কালিদাশ পাহাড়িয়া নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মৎস্য খামার বন্ধ হয়ে যাবে। যা থেকে উৎপাদিত মাছ দিয়ে পুরো চট্টগ্রামের ৭০ ভাগ মৎস্য চাহিদা পুরন করা যায়। বছরে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার মৎস্য উৎপাদন হয় এ প্রকল্পের পানি দিয়ে। নদীর তীরবর্তী ২০-২২ হাজার জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা অন্ধকারের মুখে পড়বে। বিলিন হয়ে যাবে বিরল প্রজাতির মাছ ও পশু-পাখি। সামুদ্রিক লবনাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে ধংস হবে, সবুজ বনায়ন। দেখা দেবে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্যহীনতা। বেকার হয়ে যাবে লক্ষাধিক কর্মজীবী মানুষ। সব কিছু হারিয়ে ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে পথে বসবে প্রায় ২০ লাখ পরিবার। সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধকোটিরও বেশী মানুষ। ফেনী নদীর বালু মহাল ইজারার মাধ্যমে প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। ভারতের সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় এ নদীতে পানি সঙ্কটের কারণে বালি উত্তোলন প্রক্রিয়াও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। হুমকির মুখে পড়বে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার হাজার হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ফেনীর মানুষের অনুভূতি : দলমত নির্বিশেষে ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও সোনাগজীসহ ফেনীর মানুষ ফুঁসে উঠছে। ফেনী নদীর পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও ফেনীর ছাগলনাইয়ার মানুষের মধ্যে বেড়েছে উৎকন্ঠা। পানি আগ্রাসনে ফেনী নদী শুকিয়ে যাওয়ার এবং মুহুরী সেচ প্রকল্প অকার্যকর হওয়ার আতঙ্কে রয়েছে নদীর তীরবর্তী ছাগলনাইয়ার জনগণ। ফেনী নদীর পানি রক্ষা আন্দোলনে সর্বশেষ ২০১২ সালের ৫ মার্চ লংমার্চ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি,জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাতেও বরফ গলেনি ভারতের তাই ছাগলনাইয়াসহ ফেনীর মানুষের বক্তব্য একটাইৃ‘জীবন দিয়ালামু, হেনী নদীর হানি ভারতেরে দিতাম ন’।
জেনেভা ক্যাম্পে বিক্ষোভ আন্দোলন ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ
মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকায় আটকে যাওয়া উর্দুভাষী পাকিস্তানি জনগোষ্ঠীরা শরণার্থী হয়ে রয়ে যান জেনেভা ক্যাম্পে । তারা এখনও আটকে পড়া পাকিস্তানী হিসেবে শরণার্থী মর্যাদায় বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দাবি করছে। এ নিয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন অতঃপর পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা ।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে আসা মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে গতকাল পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ সদস্যসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানও ভাংচুর করে বিক্ষোভকারীরা।
বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় দিনের বেলা বন্ধ রাখা হচ্ছে জেনেভা ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সরবরাহ। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা।
ক্যাম্পের বাসিন্দা মোস্তফা হাসান অভিযোগ করেন, কোনো ধরনের নোটিস ছাড়াই এক সপ্তাহ ধরে সারা দিন ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হচ্ছে। শুধু রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের। সংশ্লিষ্টদের কয়েক দফা বিষয়টি জানানোর পরও সমাধান না পেয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। কিন্তু ক্যাম্পের বাসিন্দাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।
তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্যমতে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির নামে সড়ক আটকে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে ক্যাম্পের বাসিন্দারা।
জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের ঘরে ফেরাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। আদাবর থানার এসআই কবির হোসেন জানান, বিক্ষোভ চলাকালে তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য কয়েক দফা অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। উল্টো তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। এমনকি পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করেছে।
বেশ কয়েক বছর আগে বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল জেনেভা ক্যাম্পে। পরে ক্যাম্পবাসীর পক্ষ থেকে আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছিলেন, তারা যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছে, সেহেতু অন্যসব নাগরিকের মতো তাদেরও বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে। আদালতের এ সিদ্ধান্তের পর সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেয়া হয়।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান বলেন, প্রতি মাসে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয় জেনেভা ক্যাম্পে। এতদিন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিল পরিশোধ করা হলেও ২০১৭ সালের মাঝামাঝি এসে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর বিদ্যুৎ বিলের ৩৪ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দিনের বেলা ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছে।
এর প্রতিবাদে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের বিক্ষোভ সংঘর্ষে রূপ নেয়া প্রসঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিল বকেয়া থাকায় জেনেভা ক্যাম্পে বিদ্যুৎ অনিয়মিত ছিল। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের সঙ্গে কথা বলতে যায়। আলোচনা চলাকালে ভুল বোঝাবুঝি হয়। একপর্যায়ে তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ওপর হামলা করে। এতে তিনি আহত হন। পুলিশ আহত অবস্থায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে। এ সময় জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা পুলিশের ওপরও হামলা চালায়।