লাইফস্টাইল ডেস্ক:
গ্লাস স্কিন!!! ইন্টারনেটের দুনিয়ায় এই কথাটা অনেকেরই চোখে পড়ে থাকবে। অনেকে জেনেও থাকবেন এই ব্যাপারে। আবার অনেকেই জানেন না এটা কি জিনিস। কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে এই গ্লাস স্কিন বেশ জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড। গ্লাস স্কিন বলতে পোরলেস, সফট, গ্লোয়িং, হেলদি এবং ডিউয়ি টাইপ স্কিনকে বোঝায়। এই টাইপের স্কিন তো আমাদের সকলেরই কাম্য। তাই না? আর এই গ্লাস স্কিন পেতে হলে আমাদের স্কিন কেয়ারে ফলো করতে হবে কিছু ধাপ।
না, এজন্য আপনেকে কোনো কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস কিনতে হবে না। বাড়িতে থাকা ইনগ্রিডিয়েন্টস দিয়েই পাওয়া সম্ভব এই গ্লাস স্কিন। কিভাবে? চলুন জেনে নেই, কিভাবে ৫টি ধাপে বাড়িতে বসেই কোরিয়ান দের মত গ্লাস স্কিন পেতে পারেন!
নরমাল ক্লিঞ্জিং তো আমরা সকলেই করে থাকি। তবে, সবসময় তাতে কিন্তু স্কিনের সম্পূর্ণ ময়লা, ধুলো, অয়েল, মেকআপ ক্লিন হয় না। এই জন্য কোরিয়ানরা ফলো করে ডাবল ক্লিঞ্জিং প্রসেস। এই প্রসেস এর জন্য, প্রথমে অয়েল ক্লিঞ্জিং করতে হবে। এজন্য, একটা বাটিতে একটু কোকোনাট বা অলিভ অয়েল নিয়ে এর সাথে সামান্য পানি মিলিয়ে নিন। এটি পুরো মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। এরপর একটা পাতলা কাপড় ওয়ার্ম ওয়াটারে চুবিয়ে নিয়ে সেটি দিয়ে মুখটা মুছে নিন। তারপর, আপনার রেগ্যুলার ফেইসওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করে মুছে নিন।
গ্লাস স্কিনের যে মেইন সিক্রেট, তা হলো হাইড্রেটেড স্কিন। হাইড্রেটেড স্কিন পেতে কোরিয়ানরা ব্যবহার করেন হাইড্রেটিং টোনার। একটানা ৭ বার এই হাইড্রেটিং টোনার ব্যবহার করা হয় বলেই একে সেভেন স্কিন মেথড (seven skin method) বলা হয়। তবে আপনি ৭ বার টোনার ব্যবহার করতে না চাইলে বা লং প্রসেস মনে হলে ৩-৪ বার ব্যবহার করলেও চলবে। হাইড্রেটিং টোনার হিসেবে আপনি রোজ ওয়াটার বা শসার রস ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া অ্যালোভেরা জেল এবং পানি মিলিয়ে নিয়েও হাইড্রেটিং টোনার বানানো যাবে। ক্লিঞ্জিং এর পর একটা স্প্রে বোতলে হাইড্রেটিং টোনার ভরে নিয়ে সারা মুখে স্প্রে করুন। এবার হাত দিয়ে ড্যাব করে আপনার ত্বককে তা শুষে নিতে দিন অর্থাৎ অ্যাবজর্ব হতে দিন। শুকানোর জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করে সেইম প্রসেস আবারো করুন। এমনভাবে ৭ বার বা এতবার না চাইলে ৩-৪ বার করবেন।
গ্লাস স্কিনের তৃতীয় ধাপ হচ্ছে অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই করা। অ্যাসেন্স স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখে, ময়েশ্চার লক করে, স্কিনে একটা বেরিয়ার তৈরী করে যাতে, স্কিনে হাইড্রেশনের অভাব না হয়। বাড়িতে অ্যাসেন্স বানানোর জন্য একটি বাটিতে ২ টেবিল চামচ পানির সাথে ২-৩ ফোটা গ্লিসারিন এবং সামান্য অ্যালোভেরা জেল নিয়ে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার, এই মিশ্রনটি থেকে অল্প একটু নিয়ে আপনার ফেইস এ অ্যাপ্লাই করুন। হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন এবং পুরোপুরিভাবে অ্যাবজর্ব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
ময়শ্চারাইজেশন ছাড়াতো কোনোভাবেই গ্লাস স্কিন পাওয়া সম্ভব নয়। আপনার স্কিন যতটা ময়শ্চারাইজড, আপনার স্কিন দেখতে ততটা হেলদি আর গ্লোয়িং লাগবে। ময়শ্চারাইজিং-এর জন্য ব্যবহার করুন আপনার পছন্দের যে কোনো ফেসিয়াল অয়েল। হাতে কয়েক ড্রপ ফেসিয়াল অয়েল নিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে নিন এবং হাত দিয়ে স্কিনটাকে ম্যাসাজ করুন। তবে খুব বেশী অয়েল ব্যবহার করার দরকার নেই। চাইলে কোনো রোলার দিয়েও ম্যাসাজের কাজটা সারতে পারেন।
এত কষ্ট করেতো চারটা ধাপ শেষ করলেন। এবার স্কিনটা কে সুন্দর রাখতে হলে প্রোটেকশনতো দরকার। স্কিনকে সূর্য এর ক্ষতিকর রশ্মি থেকে প্রোটেক্ট করার জন্য অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সে রোদ হোক, বৃষ্টি হোক, মেঘলা হোক বা হোক শীতকাল। কারণ, আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার স্কিনে ফাইন লাইনস, রিংকেলস, ব্রাউন স্পটস পড়ুক! তাই বাইরে বের হবার আগে সানস্ক্রিন লাগানো কিন্তু মাস্ট।
ঘরোয়া উপাদান দিয়ে স্কিন কেয়ার করতে যদি ঝামেলা মনে করেন, তবে আপনি অনলাইনে আপনার জন্য অথেকটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। তাছাড়া, সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপে নিজে গিয়েও কিনতে পারেন, যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত।