অনলাইন ডেস্ক:
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ নজিরবিহীন এক অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের শুদ্ধি এই অভিযানে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন বড় বড় নেতা ধরা পড়েছেন। এমনকি ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ব্যাংকের হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এদিকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী আশফাহ্ হকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের হিসাবে বিভিন্ন ব্যাংকে কী পরিমাণ টাকা জাম আছে, এসব হিসাবে কারা টাকা জমা দিয়েছে ও উত্তোলন করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি ব্যাংক হিসাবের অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তর স্থগিত করা হয়েছে।
তথ্য মতে, আরো অন্তত ২৩ জন সংসদ সদস্যের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। তারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কি কি টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস এবং অবৈধ লেনদেনসহ যে সমস্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন, সেগুলোর ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে।
সূত্রে দেখা যাচ্ছে যে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে ১৭জন এমপি ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। গোয়েন্দা সূত্রে আরো জানা গেছে, যে ১০জন এমপি হঠাৎ করে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, অন্যের ভূমি দখল, টেন্ডারবাজি, বিদেশে অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাদের ব্যাংক হিসাব তলবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। যে কোন দিন তাদের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটিশ জারি হবে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, যেসব এমপির ব্যাংক হিসাব তলব করা হবে, তাদের মধ্যে চারজনই ঢাকার। এদের মধ্যে দুজন রয়েছেন চট্টগ্রামের এমপি। রাজশাহী অঞ্চলের এমপি রয়েছেন তিনজন। তবে যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে তাদের কেউ মন্ত্রী নন।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু তারা প্রভাবশালী সংসদ সদস্য। কাজেই সবকিছু যাচাই বাছাইয়ের পরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ঠিকাদার জি এম শামীম, কৃষকলীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াসহ আরো বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী তার সিদ্ধান্তে অনড়। তিনি কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযানের পর থেকে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আত্মগোপনে গিয়ে লাভ হবে না, এরা ধরা পড়বেই।
উৎস : www.bd-journal.com