বিনোদন ডেস্ক:
আইয়ুব বাচ্চু কখনও সম্পদ গড়ার পেছনে দৌড়াননি এ অভিমত এই কিংবদন্তির আপন মামা আব্দুল আলীমের। তিনি বলেন, ‘তার মৃত্যুর পর চারদিনের সময় টাকার অভাবে কোন মিলাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তেমন কোনও অর্থকড়ি রেখে যেতে পারেননি আইয়ুব বাচ্চু। তিনি সারা জীবন গান নিয়েই ছিলেন। গান গেয়ে তিনি যা আয় করেছেন তার প্রায় সবটুকু জীবদ্দশায় দুই হাতে খরচ করে গিয়েছেন। আমার জানামতে, ঢাকার মগবাজারে একটি ফ্ল্যাট ছাড়া আর কোনও সম্পদ তার নেই।’ আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এসব কষ্টের কথা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন তার আপন মামা আবদুল আলীম।
আব্দুল আলীম আরো কষ্টের কথা জানান, ‘আইয়ুব বাচ্চু টাকা রেখে যেতে পারেননি বলে মৃত্যুর পর চারদিনের সময় তার ফাতেহা মিলাদ আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাকে দাফন করার পর পরিবারের পক্ষ থেকে ফাতেহা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে টাকা-পয়সার টানাটানির কারণে আর ফাতেহার আয়োজন করা হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করা হয়নি। আমরা যারা আত্মীয়-স্বজন ছিলাম তারা নিজেরা নিজেদের মতো করে তার জন্য দোয়া করেছি। কিছু টাকা পাওয়ার পর ৩/৪ মাস আগে তার স্ত্রী ঢাকার একটি মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। এর বাইরে তেমন কোনও অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।’
আব্দুল আলীম বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু আমার সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করতেন। অনেক ভালো মনের মানুষ ছিলেন। কেউ কোনও কষ্টে আছে দেখলেই তাকে সাহায্য করতেন। তার বড় খালা, মানে আমার বড় বোনের পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিল। চট্টগ্রামে যখনই আসতেন, আইয়ুব বাচ্চু তার খালাকে টাকা দিতে ভুলতেন না। কোনও গরিবকে তিনি কখনও ফিরিয়ে দিতে আমি দেখিনি। অসম্ভব খরচ করতেন। এ নিয়ে শেষ দিকে তার বউয়ের সঙ্গে মনোমালিন্যও হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মারা যাওয়ার তিন/চার মাস আগে তার (আইয়ুব বাচ্চু) স্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেন, মামা আপনি তাকে (আইয়ুব বাচ্চু) একটু বুঝিয়ে বলবেন যেন সব টাকা খরচ করে না ফেলে। আমাদের একটা মেয়ে, একটা ছেলে আছে। তাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা সঞ্চয় করতে বলবেন। এ কথা শুনে আমি যখন তাকে কল করে কথাটা বললাম, আমার ওপর রেগে গেলেন। বললেন, আমার টাকা আমি খরচ করবো না ফেলে দিবো সেটা আমার বিষয়। আপনারা এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলবেন না।’ তিনি বলেন, ‘কেউ মারা গেলে চারদিনের দিন মিলাদ মাহফিল ও ফাতেহার আয়োজন করা হয়। আইয়ুব বাচ্চুর ক্ষেত্রে এসবের কিছুই করা হয়নি। এটা আমাদের জন্য বড় দুঃখের।’