কারাবন্দী অবস্থায় আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই শারিরীক অসুস্থতায় ভুগছেন।খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড বলেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি এবং তিনি চিকিৎসায় সন্তুষ্ট। খালেদা জিয়ার জীবন অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং তাঁর ফিরে না আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা প্রসঙ্গে মেডিকেল বোর্ড বলছে, তাদের এমন কোনো আশঙ্কা নেই। তবে তারা এও বলছে জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক জিলান মিয়া এসব জানানো হয়। গত এপ্রিল থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে কারা তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য এক স্থায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬২১ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন আছেন।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, বাত রোগের চিকিৎসার জন্য যে আধুনিক চিকিৎসা প্রয়োজন তার জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণের সম্মতি দেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া এ বছরের এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি আছেন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক বলেন, সম্প্রতি তাঁর স্বজন ও দলের রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক জানান, ‘ভর্তি হওয়ার সময়েই খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, বাতজ্বর, দাঁতসহ কিছু সমস্যা ছিল। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্থায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত তদারকি করা হয় জানিয়ে পরিচালক বলেন, ব্লাড পেশার, পালস ব্লাড সুগার প্রতিদিন মাপা হয়। ইনসুলিন, ইনজেকশন নিয়মিত দেওয়া হয়। একদিন পর পর ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ড একযোগে বা আলাদাভাবে ওনার চিকিৎসা তদারকি করে থাকে।
চিকিসৎকেরা সব সময় খালেদা জিয়াকে দেখার সুযোগ পান না উল্লেখ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক বলেন, ‘একটি বিষয় আগে কখনোই বলতে চাইনি। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদের প্রেক্ষিতে বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার। চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে সব সময় দেখার সুযোগ পান না। ওনার কাছ থেকে আগে অনুমতি নিতে হয়। বেশির ভাগ সময় বেলা দেড়টা বা তারপরে উনি সময় দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে নির্ধারিত সময়ে দেখা পাওয়া যায় না। একবার বোর্ডের চিকিৎসকেরা বেলা সাড়ে চারটা পর্যন্ত বসে থেকেও তাঁকে দেখার সুযোগ পাননি।’ তিনি জানান, ওনার বাত রোগের আধুনিক চিকিৎসার জন্য এক ধরনের ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এখনো সেটা দেওয়ার ব্যাপারে খালেদা জিয়ার সম্মতি পাওয়া যায়নি। তাই আগের পদ্ধতিতেই এই রোগের চিকিৎসা চলছে।