রিকশা চুরি করে কাউন্সিলর, অতঃপর কোটিপতি! - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
রিকশা চুরি করে কাউন্সিলর, অতঃপর কোটিপতি! - Shera TV
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৫ অপরাহ্ন

রিকশা চুরি করে কাউন্সিলর, অতঃপর কোটিপতি!

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব ও মিজান গ্রেফতারের পর এবার আলোচনায় ঢাকা উত্তর সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসেম হাসু। ভাই আবুল কাসেম কাসুকে সঙ্গে নিয়ে করে যাচ্ছেন বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। গড়ে তুলেছেন শত কোটি টাকার সম্পত্তি।

জানা গেছে, হাসু-কাসুর বাবা এক সময় গ্রাম থেকে আখ এনে রাজধানীতে ফেরি করতেন। তখন তাদের বসবাস ছিল আগারগাঁও বস্তিতে। এর পর এক সময় রিকশা চুরি করতে শুরু করেন দুই ভাই। নব্বই দশকের কথা এগুলো। সে সময় তারা রিকশা চোরদের সর্দার ছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ বস্তিতে তখন দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অবাধ যাতায়াত ছিল। সেই সুবাদে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সঙ্গে হাসু-কাসুর সখ্য গড়ে ওঠে। এ সখ্যকে পুঁজি করে ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেন দুই ভাই। পরে অস্ত্রবাজ বাহিনী গড়ে তুলে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে এখনও বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সরকারি খাসজমি, ফুটপাথ, এমনকি সড়ক,  সেই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির প্লট ও বাড়ি দখলে সহায়তা। মতের অমিল হলেই নিজের গড়ে তোলা সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে হামলা। নিজের দখলেও রয়েছে অর্ধশত বাড়ি ও প্লট। এসব অভিযোগ ঢাকা উত্তর সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসেম হাসুর বিরুদ্ধে। এত দিন ভয়ে মুখ না খুললেও চলমান অভিযানের পর ভুক্তভোগীরা দুই ভাই হাসু ও কাসুর বিরুদ্ধে আনছেন নানা অভিযোগ।

আলী হোসেন। আদাবরের ৬ নং রোডের ২০৩ দাগে ৬৪ ও ২০৯ দাগে ১৬০ কাঠার জমির মালিক। প্রায় শতকোটি টাকার এই জমি এখন দখলে রাখার অভিযোগ ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসেম হাসু ও তার ভাই আবুল কাসেম কাসুর বিরুদ্ধে। নিজের পৈতৃক জমি ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দখলদারদের দৌরাত্মে অসহায় হয়ে উল্টো জমি ফিরে পেতে গিয়ে নিজেই মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত।

আলী হোসেনের মত দেলোয়ার হোসেনের জমিও হাসু আর কাসুর দখলে। নিজের সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে উত্তর আদাবরের আলিফ হাউজিংয়ে ৩ কাঠার জমি কিনলেও সেখানে বাড়ি নির্মাণ করেছেন ওই দু’ভাই। বেহাত জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করলে উল্টো তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এমন অর্ধশত জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। নবোদয় হাউজিংয়ে অন্তত চারটি , আদাবরের ১৮ থেকে ৯ নং রোড পর্যন্ত দশটি প্লট দখলের অভিযোগসহ খাস জমি ও খাল দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এমনকি রাস্তা দখল করেও দোকান করেছেন তিনি। আর এসব জমি ফিরে চাইতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েছেন অনেকে। 

এতো গেল তার জমি দখলের কেচ্ছা। এলাকায় তার প্রভাব এতটাই যে মতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন আওয়ামী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে বাঁধা দেওয়াসহ অবৈধ দখলবাজি ও চাঁদাবাজির জন্য দল থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলেন তিনি। এখনও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। 

হামলার শিকার আদাবর থানা ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘কথাবার্তা যে শুনেনি তাকেই সে মেরেছে। আমিসহ আদাবরের ৫০ জনের মত নেতাকর্মীকে তারা কুপিয়েছে।’

আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শামিম বলেন, ‘গত ১৫ বছর, তারা দুই ভাই মিলে মনে করে তারা এই আদাবরের রাজা। সবাই প্রজা।’   

 আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছেসবকলীগ সে যেই হোক, যে তার বিরুদ্ধে বলে সে তাকেই সায়স্তা করে।’  

এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যার ঘটনায় তার অনুসারীদের হাতে রয়েছে বলেও অভিযোগ আছে। ভুক্তোভোগীরা জানালেন, মামলা তুলে নিতে কাউন্সিলরের লোকজন নিয়মিত হুমকি দেয় তাদের।

তবে, এত অভিযোগে থাকলেও কাউন্সিলর আবুল হাসেম হাসু বলছেন, তার বিরুদ্ধে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

এদিকে, এত অভিযোগের পরেও কাউন্সিলর হাসু রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

সূত্র: বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360