মারিয়া ব্যারেট ও পাউলা লোডি নাম দুটি এখন একই সাথে গৌরবের ও নারী সমাজের অহংকারে পরিণত হয়েছে । সম্পর্কে তারা সহোদরা। একজন ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন। অন্যজনের ইচ্ছে ছিল ফরেন সার্ভিসের পরীক্ষা দিয়ে আমলা হবেন। কিন্তু, ভাগ্যের ফেরে দু’জনেরই ঠাঁই হলো সেনাবাহিনীতে।
শুধু এটুকুতেই থেমে গেছেন তা ভাবা মোটেও ঠিক নয়।চলতি গ্রীষ্মেই মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছেন তারা। পাউলা মেজর এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হয়েছেন মারিয়া। সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। কারণ মার্কিন সেনাবাহিনীতে এর আগে আর কোনো বোনেদের এভাবে শীর্ষপদ আরোহণের নজির নেই।
সত্যিই কি মারিয়া এবং পাউলাই প্রথম? অন্তত মার্কিন সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষের দাবি তেমনই। সাধারণত নারীরা বিয়ের পর পদবি পাল্টে নেন। তাছাড়া মার্কিন সেনার তথ্যভাণ্ডার হাতড়ে, নাম এবং পদবি মিলিয়ে শুধুমাত্র বোনেদের খুঁজে বের করাও প্রায় অসাধ্য। কিন্তু, যেহেতু বাহিনীতে নারী জেনারেলদের সংখ্যা একেবারেই হাতে-গোনা, তাই পাউলা ও মারিয়াকে সহজেই চিহ্নিত করা গেছে বলে মনে দাবি করেছেন মার্কিন সেনার এক মুখপাত্র। গত জুলাই মাসে বছর একান্নর পাউলা পদন্নোতি পেয়ে সেনাবাহিনীর সার্জন জেনারেল হিসেবে ডিরেক্টর অব হেলথ কেয়ার অপারেশনস-এর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আর তিপ্পান্ন বছরের মারিয়া মার্কিন সেনার সাইবার শাখা নেটকম-এর কমান্ডিং জেনারেলের দায়িত্ব পেয়েছেন।
মার্কিন সেনাবাহিনীর ২৪৪ বছরের ইতিহাসে ১৯০১ সালে প্রথম নার্স হিসেবে নারীদের বাহিনীতে নেয়া শুরু হয়। তবে, পাউলা ও মারিয়া সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন ১৯৯৪ সালে। ওইসময় অবশ্য সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার অনুমতি নারীদের দেয়নি পেন্টাগন। সেই ছাড়পত্র মেলে আরো পরে, ২০১৫ সালে। তবে, পাউলাদের বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে সেই সময়কার নারীদের বাহিনীতে যোগদানের প্রেরণা জুগিয়েছিল।
স্বয়ং মারিয়ার কথায়, ‘একই পরিবারের দুই বোনের সেনাবাহিনীর শীর্ষপদে উঠে আসাটা লটারির মতো মনে হতে পারে। কিন্তু, কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। কঠোর অধ্যাবসায়, নেতৃত্বদানের অসামান্য ক্ষমতা, প্রযুক্তিগত জ্ঞান না থাকলে আমরা এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না।’পাউলা বলেন, ‘ছোটবেলায় স্কুলের একই টিমে ফুটবল খেলতাম আমরা। তখনো ভাবিনি ২৭-৩০ বছর পর আমরা এখানে থাকব।’
কিন্তু, ভাগ্যই তাদের একই রাস্তায় এনে ফেলেছে।