বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক:
গত এক বছরে যেসব দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে কমেছে তার শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি বাংলাদেশ৷ ফ্রিডম হাউজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের করা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে৷ গত এক বছরে ৬৫ টি দেশের মধ্যে ৩৩ টি দেশেই ইন্টারনেট ব্যবহার স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হয়েছে৷ ৩৮ টি দেশের সরকার জনগণের মতামত নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিবিশেষকে নিয়োগ দিয়েছে৷ গোটা বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতার সার্বিক স্কোরেরও অবনতি হয়েছে৷
ইন্টারেনেট ব্যবহারের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের এবারে স্কোর ১০০ তে ৪৪, যা গতবছর ছিল ৪৯৷ যেসব দেশের এবার বেশি অবনতি হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ৷ অবনমনে শীর্ষে সুদান৷ তার পর আছে কাজাখস্তান ও ব্রাজিল৷
ইন্টারনেট ব্যবহারের বাধায় বাংলাদেশের স্কোর ২৫ এ ১৩৷ কনটেন্টে বাধা প্রদানে পেয়েছে ৩৫ এ ১৭৷ সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের অধিকার হরণে৷ এক্ষেত্রে পয়েন্ট ৪০ এ মাত্র ১৪৷
গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারে নানা ভাবে বাধা তৈরি করেছে সরকার৷ নির্বাচনের সময় মোবাইল সেবায় বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের স্কাইপি আলাপে বাধা দেয়া হয়েছে৷ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ৫৮ টি সংবাদ সাইট৷ ফেব্রুয়ারিতে ২০ হাজার পর্ন ও জুয়ার সাইট বন্ধ করে দেয়া হয়৷ বন্ধ করা হয়েছে সবচেয়ে বড় ব্লগিং ওয়েবসাইটও৷
সেপ্টেম্বরে কার্যকর করা হয়েছে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন৷ ইন্টারনেটে মানহানি, অশ্লীল কনটেন্ট, মিথ্যা তথ্য প্রদানসহ আইনভঙ্গকারিদের সাত বছরের জেল এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধন রয়েছে৷ সাংবাদিক, আন্দোলন কর্মী, শিক্ষকসহ এই আইনের অধীনে অনককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ জানুয়ারিতে একজনকে সাত বছরের জেলও দেয়া হয়েছে৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারির জন্য একটি প্রকল্পে গত বছরের অক্টোবরে ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে সরকার৷ র্যাবের অধিনে নভেম্বরে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়৷
বিভিন্ন কোম্পানিকে কনটেন্ট সরানোর জন্য চাপ দিয়েছে সরকার৷ গত বছরে ৭৪ টি কনটেন্ট সরিয়ে নিতে গুগলকে আটটি অনুরোধ করা হয়েছে৷ অনলাইন কনটেন্ট বন্ধে অনানুষ্ঠানিক পথও অবলম্বন করা হয়েছে৷ সরকার বিরোধী পোস্টের কারণে বিভিন্ন সাংবাদিকদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধের সরকারপন্থীরা ভূমিকা রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে ফেসবুক নিজ থেকেই সরকার সমর্থিতদের পরিচালিত বেশ কিছু পেইজ ও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে৷ সংগঠিতভাবে তথ্য বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ডিসেম্বরে রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যক্তির টুইটার অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল৷
সেরা নিউজ/আকিব