রোহিত শার্মার ১০০ তম টি২০ সম্পুর্ন নিজের করে নিলেন অনবদ্য এক ইনিংস খেলে। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সহজ জয় পেল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্য ২৬ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে পাড়ি দেয় স্বাগতিকরা। দলের হয়ে রোহিত শার্মা খেলেন ৪৩ বলে ৮৬ রানের ঝড়ো ইনিংস।
বৃহস্পতিবার রাজকোটে সিরিজ জয় করে ইতিহাস রচনার মিশনে নামে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে না পারা এবং বোরিং ব্যর্থতায় তা আর সম্ভব হয়নি। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ (৩৬) রান করেন মোহাম্মদ নাঈম।
রাজকোট সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে মুদ্রা নিক্ষেপে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শার্মা।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম। ওপেনিং জুটিতে ৭.১ ওভারে দু’জনে তোলেন ৬০ রান।
কিন্তু অসচেতনতায় বল না দেখেই দৌড় দিয়ে ৬০ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ২১ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। লিটন ফিরলে ৮৩ রানের মাথায় ফেরেন আরেক ওপেনার নাঈমও। ৩০ বলে পাঁচ বাউন্ডারিতে ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
ওপেনারদের কাছ থেকে বড় সংগ্রহের সুবাস পেয়েও, পরবর্তী ব্যটসম্যানদের বর্থ্যতায় স্কোর আর বড় করা সম্ভব হয়নি।
গত ম্যাচের জয়ের নায়ক মুশফিকুর রহিম এদিন ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ। চারে ব্যাট করতে নেমে ৬ বলে ৪ রান করে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে ক্রুণাল পান্ডিয়ার তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
ওয়াডাউনে ব্যাট করতে নামা সৌম্য সরকার দেখে-শুনে শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২০ বলে ৩০ রান করে চাহালের ওভারে ঋষভ পান্তের স্ট্যাম্পিংয়ে ফেরেন তিনিআফিফ হোসেনের ব্যাটও ছিল ব্যর্থ। ৮ বলে ৬ রান করে খলিল আহমেদের বলে রোহিত শার্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।২১ বলে ৩০ রান আসে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ৬ ও আমিনুল ইসলামের ৬ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
ওপেনারদের দুর্দান্ত সূচনার পর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় বড় ইনিংস গড়া সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের। তবুও লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।ভারতীয় বোলারদের মধ্যে যুজবেন্দ্র চাহাল ২টি, ওয়াশিংটন সুন্দর, খলিল আহমেদ ও দীপাক চাহার একটি করে উইকেট শিকার করেন।
সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার রোহিত শার্মা ও শিখর ধাওয়ান জুটিতে তোলেন ১১৮ রান। তখনই জয় অনেকটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাগতিকদের কাছে। ধাওয়ান একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকলেও ঝড় তোলেন রোহিত। ১১৮ রানের মাথায় ধাওয়ানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ২৭ বলে ৩১ রান করেন এই ওপেনার।
অন্য দিকে রোহিত মাত্র ২৩ বলে তুলে নেন ফিফটি। মোসাদ্দেক হোসেনের তিন বল টানা বাইরে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিক করেন ছক্কার। একটা সময় মনে হচ্ছিলো শততম ম্যাচে এসে হাঁকাবেনও শতক। কিন্তু বিপ্লব আর তা হতে দেননি। এই লেগিকে ১২৫ রানের মাথায় উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছে দাঁড়ানো মিথুনের তালুবন্দী হন রোহিত। আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৮৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যান তিনি। ৬টি চার ও সমানসংখ্যক ছক্কায় ইনিংসটি সাজান ভারতীয় অধিনায়ক।
শেষ দিকে স্রেয়াশ আয়ারের ১৩ বলে ২৪ ও লোকেশ রাহুলের ৮ রানে ১৫.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ২৯ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট শিকার করেন।
এই ম্যাচে ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন রোহিত শার্মা।