মাসিক প্রায় দুইলাখ টাকা বেতনে শ্রমিক নেবে জাপান - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
মাসিক প্রায় দুইলাখ টাকা বেতনে শ্রমিক নেবে জাপান - Shera TV
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন

মাসিক প্রায় দুইলাখ টাকা বেতনে শ্রমিক নেবে জাপান

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৯

জাপানে বাংলাদেশী শ্রমিক প্রেরণের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে অনেক আগেই। তবে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর (এমওইউ) হলেও এখনো ১৪টি খাতের কোনো খাতেই দেশটিতে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী জাপান সরকার ছয় বছরের মধ্যে ১৪টি সেক্টরে (২০২৫ সাল) বাংলাদেশসহ ৯টি দেশ থেকে সাড়ে তিন লাখ দক্ষ জনবল নেবে।
এ দিকে দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্য জাপানগামী কর্মীদের সরকারি এবং বেসরকারিভাবে জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেসব সৌভাগ্যবান কর্মী গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিং শেষে ঢাকার জাপান দূতাবাস থেকে জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষণের দু’টি লেভেলের ওপর সার্টিফিকেটের জন্য মনোনীত হবেন, তাদের জন্যই জাপান যাওয়ার পথ সহজ হবে। আর ওই সব শ্রমিক জাপানে যাওয়ার পর কোম্পানিতে থাকা-খাওয়ার সুযোগ পাওয়ার পরও প্রথম ধাপে তাদের বেতন হবে ন্যূনতম পৌনে দুই লাখ টাকা। আর যারা আইটি খাতের ওপর দক্ষতা অর্জন করে যাবেন, তাদের একেকজনের সব সুযোগ সুবিধা ছাড়াই সর্বোচ্চ তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন হতে পারে।

গতকাল শুক্রবার বেসরকারিভাবে জাপানে কর্মী পাঠানোর জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পাওয়া ১১ রিক্রুটিং এজেন্সির একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজের পরিচয় না জানিয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, যেসব শ্রমিক জাপান যাওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হবেন তার আগে তাদেরকে অবশ্যই জাপানিজ ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। শুধু জাপানিজ ভাষায় অনর্গল কথা বললেই হবে না, তাকে অবশ্যই জাপানিজ ভাষায় লেখারও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে ওই মালিক বলেন, জাপানি ভাষায় অনেকগুলো লেভেল রয়েছে। এর মধ্যে দু’টি লেভেল প্রত্যেক শ্রমিককে পার হতে হবে। এক এন-ফোর (কঠিন) এবং এন-ফাইভ (এন ফোর থেকে একটু সহজ)। জাপানিজ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে তিন মাসের ট্রেনিং নিয়ে যারা জাপানি ভাষা শিখতে পারবেন, তাদেরকে পরবর্তী ধাপ অর্থাৎ ঢাকার জাপান দূতাবাস থেকে জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি পরীক্ষায় (জেএলপিটি) অবশ্যই উত্তীর্ণ হয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জাপানে লোক পাঠানোর অনুমতি পাওয়ার পরই তার নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টারে জাপানিজ প্রশিক্ষক দ্বারা ভাষা প্রশিক্ষণের ওপর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তিন মাসের কোর্সের জন্য ভর্তি ফি ১৫ হাজার টাকা। থাকা-খাওয়া মিলিয়ে আরো ১০ হাজার টাকা খরচ হবে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভাষা শিখতে পারবে না তাদের পরবর্তীতে রিনিউয়াল ফি দিয়ে আরো দু-তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সপ্তাহে চার দিন দেড় ঘণ্টা করে ক্লাস নেয়া হয়।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই একজন শ্রমিক জাপানিজ ভাষার জন্য প্রয়োজনীয় এন-ফোর এবং এন-ফাইভ (লিখিত ও স্পোকেন) ভাষা শিখতে পারবে। এর পরই দ্বিতীয় ধাপের জন্য তাকে পাঠানো হবে ঢাকার জাপানি দূতাবাসে। সেখানে কর্মী পরীক্ষা দেবে। ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স সার্টিফিকেটের জন্য উত্তীর্ণ হলে তখনই রিক্রুটিং এজেন্সি মনোনীত জাপানে থাকা প্রতিনিধি ওই শ্রমিকের জন্য জাপানে চাকরি (জব) খোঁজা শুরু করবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একজন কর্মীকে জাপান পাঠানোর জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে একটি টাকাও খরচ হবে না। বিনা টাকায় একজন শ্রমিক জাপানে যেতে পারবে। আর সেখানে যাওয়া শ্রমিকরা প্রথম মাসেই বেতন পাবে ন্যূনতম এক লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। আবার যারা আইটি খাতে দক্ষ তারা বেতন পাবেন তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা। সেটি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। একজন শ্রমিক পাঠানোর জন্য জাপান সরকার রিক্রুটিং এজেন্সিকে বিমান টিকিট দেবে। পাশাপাশি ভালো পরিমাণের সার্ভিস চার্জ দেবে। তাই যারা জাপান যাবেন তারা কোনোভাবেই কোনো দালালের কাছে গিয়ে প্রতারিত না হন সে ব্যাপারে তারা সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

গত বুধবার জাপানের ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একজন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত যত দেশে শ্রমিক যাওয়ার অনুমোদন রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হচ্ছে জাপান। জাপানে সুন্দরভাবে লোক পাঠাতে পারলে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসবে এই দেশ থেকেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সেভাবে মনিটরিং করছে না। যেসব আবেদন এখনো মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে তাদের বিষয়গুলো এখনো বিবেচনা করা হয়নি। তার মতে, জাপানের শ্রমবাজারে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা কেউ সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা দরকার। দু-একজন রিক্রুটিং এজেন্সির প্রলোভনের কারণে যদি এই বাজারটি হাতছাড়া হয়ে যায় তা হলে এর খেসারত আমাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে দিতে হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ (কোনোভাবেই নাম প্রকাশে রাজি নন) বলেন, জাপানে শ্রমিক পাঠানোর জন্য উচ্চমাত্রার প্রফেশনালিজম দরকার বলে মনে করেন তিনি। এর আগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের এপিএস মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, জাপানে শ্রমিক প্রেরণে প্রতারক চক্র সক্রিয়। তাদের থেকে সাবধান থাকার জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশ থেকে তিন লাখ ৪০ হাজার কর্মী নেবে জাপান। ১৪ খাতে কর্মী নিতে অভিবাসন নীতি শিথিল করেছে এশিয়ার ধনী দেশটি। বিনা খরচে জাপান গিয়ে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে চাকরি পেতে হতে হবে দক্ষ। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন স্বাক্ষরিত অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কর্মী হিসেবে জাপান যেতেচাইলে, কমপক্ষে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রাার্থীদের উচ্চতা হতে হবে কমপক্ষে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। নারী প্রার্থীরা পাঁচ ফুট উচ্চতা থাকলেই আবেদন করতে পারবেন।


প্রার্থীদের শারীরিকভাবে নিয়োগ, সবল হতে হবে। শুধু ২০ থেকে ২৮ বছর বয়সীরাই আবেদন করতে পারবেন। দেশের ৩২টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) ছয় মাস মেয়াদি জাপানি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এখানে জাপানি ভাষার এন-ফোর লেভেল সম্পন্নকারীরা জাপান যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া প্রার্থীরা যে খাতে কাজ করতে আগ্রহী, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এ দিকে জাপান পাঠানোর কথা বলে কেউ যদি টাকা দাবি করে তা হলে সাথে সাথে ০১৭১৬২৬৯৪২৬ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


এর আগে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) জাকির হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি ট্রেনিংসহ শ্রমিক পাঠানোর কার্যক্রম করবেন তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেয়া হবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে। আর জাপানে দূতাবাস থেকে দেখা হবে এখানকার চাহিদাপত্র যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়গুলো এখন থেকে মনিটরিং করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360