রাতে ঘুমোতে গেলে অনেক সময় কারো নাক ডাকার আওয়াজ শুনে মনে হতে পারে সিংহের গর্জন। এই বিকট শব্দ নাক ডেকে ঘুমানো ব্যক্তির পাশে অন্য কেউ ঘুমানোটাও বড় দায়। আমরা এই নাক ডাকার সমস্যাকে খুব একটা বড় আকারে না দেখলেও এর জন্য ঘটতে পারে মৃত্যুও।
চিকিৎসকেরা বলছেন, নাক ডাকা অন্য অনেক স্বাস্থ্যসমস্যার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকির আলামতও হতে পারে। তাই নাক ডাকাকে যত দ্রুত সম্ভব দূর করা উচিৎ। সহজ কিছু কৌশল ব্যবহার করে নাক ডাকা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কাত হয়ে ঘুমান: যারা চিৎ হয়ে ঘুমান তাদের মধ্যে বেশীরভাগ মানুষকে নাক ডাকতে দেখা যায়। এর কারণ হলো যখন চিৎ হয়ে শোয়া হয় তখন গলায় ভাইব্রেটিং শব্দের সৃষ্টি হয় যা নাক ডাকা হিসেবে ধরে নেই আমরা। কাত হয়ে বা যে কোন একপাশ হয়ে ঘুমালে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অ্যালকোহলকে না বলুন: বেশি পরিমাণে অ্যালকোহল বা মদ-জাতীয় পানীয় পানের কারণে কারও নাক ডাকতে পারে। অ্যালকোহল জিভের পেশিগুলোকে শিথিল করে দেওয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের নালি সংকুচিত হয়ে পড়ে আর এ থেকে নাক ডাকা শুরু হয়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করার চেষ্টা চালানো যেতে পারে।
ধূমপান ছাড়তে হবে: ধূমপানের কারণে এমনিতেই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কিছু জটিলতা তৈরি হয়। আবার ধূমপান থেকে টারবাইনেটস নামে নাকের বিশেষ এক ধরনের টিস্যু স্ফীত হয়ে যেতে পারে এবং এ থেকেও শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। ধূমপানের এই দুই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। ধূমপানের বদ-অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে আপনার আর আপনার সঙ্গীর রাতের ঘুমই শুধু ভালো হবে না, তা আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যের নাটকীয় উন্নতিতে সহায়ক হবে।
মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত পরিমাণে মসলাযুক্ত খাবার খেলে পাকস্থলীতে বেশি মাত্রায় অ্যাসিডের প্রতিক্রিয়া শুরু হতে পারে। অনেক গবেষণা থেকেই দেখা গেছে, এ জাতীয় সমস্যার সঙ্গে নাক ডাকার সম্পর্ক আছে। যদি কিছুতেই নাক ডাকার কারণ খুঁজে বের করতে না পারেন, তাহলে খাবারদাবারে মসলার পরিমাণ কমিয়ে বিষয়টা পরীক্ষা করে দেখতে ক্ষতি কি।
ওজন কমানোর চেষ্টা করুন: ওজন বাড়ার সাথে নাক ডাকার সম্পর্ক রয়েছে। ওজন বাড়লে গলায় মেদ জমে এতে শ্বাসনালীর ব্যাস কমে আসে যা নাক ডাকার উদ্রেক করে। তাই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন নাক ডাকা কমে যাবে।
পরিমিত ঘুমান: ঘুম কম হলে নাক ডাকার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। যারা প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের নাক ডাকতে বেশি দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে ডাক্তাররা বলেন, যারা কম ঘুমান তাদের ঘুমের চাহিদা রয়ে যায়, ফলে ঘুমুতে গেলে অনেক বেশি গভীর ঘুমে চলে যান এবং ক্লান্তির জন্য শরীরের মাংসপেশি এলিয়ে পরে। এতে নাক ডাকা শুরু হয়।
বালিশ বদলে ফেলুন: ঘরের ধুলোময়লাতে থাকা ডাস্ট মাইট বা এলার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থ নাক ডাকার জন্য দায়ী। এই ডাস্ট মাইট বিশেষ করে বালিশে বাসা বাঁধে। যদি কোন কিছুতেই নাক ডাকা না কমে তাহলে বালিশ বদলে নতুন বালিশ আনুন।