ভারতে একের পর এক ধর্মীয় বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। তবে এবার তা আর নীরবে মেনে নেয়নি ছাত্র সমাজ।ধর্মীয় বৈষম্যের ভিত্তিতে নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে ভারতে চলমান আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে নতুন আইনের মাধ্যমে সরকার হিন্দু জাতিয়তাবাদ ছাড়িয়ে দিচ্ছে বলে ব্যাপক সমালোচনার মাঝে বিতর্কিত এ বিলটি দ্রুত আইনে পরিণত করা হয়।
গত রবিবার দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্বাবদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশি অভিযানের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সারা ভারতের ক্যাম্পাসগুলো। সেদিন পুলিশ ক্যাম্পাসে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে এবং প্রায় ১০০ ছাত্রকে আহত করে। সোমবার এর প্রতিবাদে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করে জনতা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নাজমা আকতার পুলিশ কিভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ বিষয়ে তদন্ত করার দাবি জানায়।
রবিবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপরও একইভাবে দাঙ্গা পুলিশ হামলা করে বলে জানায় দ্যা গার্ডিয়ান।
জামিয়ার হামলা ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোপ প্রদর্শন করতে থাকে। এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দিল্লির আজাদ মেডিক্যাল কলেজ, মুম্বাই, বেঙ্গালুর জৈন বিশ্ববিদ্যালয়, চেন্নাই ও পুদুচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিক্ষোভ হয় আলিগড়, লাখনউ, গুহাটি ও কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালে। হায়দারাবাদ, পাটনা ও বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও প্রতিবাদে করেছে বৈষম্যমুলক এ নাগরিকত্ব আইনের।
রাজনৈতিকভাবেও চাপে আছে মোদি সরকার এ আইন নিয়ে। ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মমতা এবং তিনিসহ ৬ রাজ্য এ আইন বাস্তবায়ন করা হবে না ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার বিকেলে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে ইন্ডিয়া গেটের সামনে দু’ ঘণ্টা রাস্তায় অবস্থান করেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিও এটাকে মুসলিম বিরোধী আইন বলে এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।