আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ‘যুগান্তকারী’ এক অস্ত্র আনার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। তারা দাবি করছে, ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোনসহ আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত অস্ত্র ঠেকাতে লেজার ডিফেন্স সিস্টেম (প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা) নিয়ে আসছে তারা। এটিকে সমরাস্ত্রখাতে ‘প্রযুক্তিগত যুগান্তকারী’ অর্জন বলেও দাবি করছে ইসরায়েল।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হবে। দেড় বছরের মধ্যেই এটি অপারেশনে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলের বিদ্যমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যোগ হবে। বর্তমানে ইসরায়েল ‘আয়রন ডোম’ নামে এক ধরনের ভ্রাম্যমাণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অপারেশনে রেখেছে, যা সব ধরনের আবহাওয়ায় সমান কার্যকর।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বৈদ্যুতিক লেজার-ভিত্তিক। এটি নিঃশব্দে এবং শত্রুপক্ষের ধারণার বাইরে তাদের অলক্ষে কাজ করতে সক্ষম।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অস্ত্র প্রস্তুত ও প্রাযুক্তিক অবকাঠামো প্রশাসনের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়ানিব রোতেম এ বিষয়ে বলেন, ‘স্থল, জল ও আকাশের জ্বালানিভিত্তিক যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করছি। এই সক্ষমতা ইসরায়েলকে উচ্চ-জ্বালানির লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোতে স্থান করে দিতে চলেছে। ২০২০ সালের মধ্যেই আমরা আমাদের সক্ষমতার নমুনা দেখাতে পারবো।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে ইরাকে তাদের সামরিক ঘাঁটিতে এবং পরে বাগদাদে তাদের দূতাবাসের অদূরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েল নতুন এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আনার ঘোষণা দিলো।
গত ৩ জানুয়ারি ভোরে মার্কিন বাহিনী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অতর্কিত এবং একপাক্ষিক হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস্ ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে তাদের সামরিক ঘাঁটি ও দূতাবাসের অদূরে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এ নিয়ে যুদ্ধ বাঁধার শঙ্কা তৈরি হলে দুর্ভাবনায় পড়ে ইসরায়েলও।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল তাদের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে ইরানকে দেখে। দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের দূরত্ব ১৭০০ কিলোমিটারের মতো। কিন্তু ইরানের শাহাব-৩ নামে এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার রেঞ্জ বা আওতা ২০০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ গোটা ইসরায়েলকেই শাহাব-৩ দিয়ে টার্গেট করতে পারবে ইরান।