স্পোর্টস ডেস্ক:
আচ্ছা, মাশরাফি বিন মর্তুজা কি অভিমানে চুপ হয়ে গেছেন? জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না। কবে নাগাদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন? কোন মাসে কার বিপক্ষে সিরিজে? সামনে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ, সেটাই কি হবে তার শেষ সিরিজ? নানা প্রশ্ন, গুঞ্জন। জল্পনা-কল্পনার ফানুস বাতাসে।
আসলে কি ভাবছেন মাশরাফি? তবে কি তিনি মাঠ থেকে অবসরে যাওয়ার কথা ছেড়ে অভিমানে মাঠের বাইরে থেকেই সরে দাঁড়াবেন? এমন ফিসফাসও কিন্তু আছে। আজ (শুক্রবার) এসব কৌতুহলী প্রশ্নর জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
সন্ধ্যায় রংপুরের কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসেছিলেন ঢাকা প্লাটুন অধিনায়ক। ঢাকার সুপার ফোর নিশ্চিত। আজ জিতলে হয়তো প্রথম দুই দলের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল হতো। তা নিয়ে কথা হলো। মাশরাফি কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিলেন। কিন্তু এক পর্যায়ে পুরো কথোপকথন চলে গেল তার জাতীয় দল থেকে অবসর প্রসঙ্গে।
কথার শুরুতে জানিয়ে দিলেন, কোনোরকম মান ও অভিমান তার নেই। জানিয়ে দিলেন, টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের পেছনেও অনেক কাহিনী ছিল। কিন্তু সে সব নিয়ে তিনি একটি কথাও বলেননি। আজ অবসর প্রসঙ্গ আসতেই কেমন যেন হয়ে গেলেন মাশরাফি। অনেক কথার ভীড়ে এক পর্যায়ে বলেও ফেললেন, আপনি বলতে পারেন অবসর সবাই করিয়ে দিয়েছে।
মুখে তাই এমন কথা, ‘অভিমান আমার মনে হয় না। আমি যখন টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছি অনেক কারণ আপনাদের বলেছি। আমি অভিমান-টভিমান নিয়ে চলি না। এটা একেবারেই নাই। আর অবসর নিয়ে যেটা বললেন, আমি নিজেও হয়তো যে জায়গায় অবস্থান করছি, সেটাকেও এনজয় করছি।’
মাঠ থেকে অবসর নেবেন কি না? সে প্রশ্নের জবাবেও পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। নেবই-তাও বলেননি, আবার নেব না- এমনটা বলতে গিয়েও থেমে গেলেন। তবে অবসরের বিষয়ে কেন যেন নিজের ইচ্ছের চেয়ে বোর্ডের কোর্টেই বল ঠেলে দিলেন দেশের ক্রিকেটের সব সময়ের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক। তাই তো মুখে এমন কথা, ‘মাঠ থেকে অবসর নেব কি নেব না সেটা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যদি সেরকম অবস্থা তৈরি হয়, ক্রিকেট বোর্ড যদি মনে করে তাহলে হয়তোবা চিন্তা ভাবনা করব।’
মুখে বললেন অভিমান নেই। তবে অবসরের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেন যেন মনে হলো ভেতরে চাপা যন্ত্রণা আছে। এবং বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্ট (নির্বাচকরা) তাকে খানিক এড়িয়ে চলছে।
তাই জাতীয় দলে খেলা চালিয়ে যাবার বদলে মাশরাফি ফিরে যেতে আগ্রহী শেকড়ে মানে ঘরোয়া ক্রিকেটে। অনেক কথার ভীড়ে কিছু কথা একদম নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন। তার মূল হলো, একজন ক্রিকেটারের জন্য শুধু জাতীয় দলে খেলাই প্রথম ও শেষ কথা নয়।
আমার বিদায়ে ফুলের তোড়া নিয়ে মাঠে আসাও খুব জরুরী নয়
অবসরটাতেও অত ঘটা করে বড়সড় আয়োজন এবং ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হওয়া খুব জরুরী বলে মনে করেন না মাশরাফি। মাঠ থেকে বিদায় প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেও ফেলেছেন, ‘সবাই ফুলের তোড়া নিয়ে আসবেন, সেটাও খুব প্রয়োজনীয় নয়।’
মাশরাফি আরও বলেন, ‘কেউ জাতীয় দল থেকে শুরু করে না। যে খেলাটা শুরু করেছিলাম আমি আবার সেখানে (ঘরোয়া) ফিরে গেছি। বিপিএল খেলেছি, সামনে ঢাকা লিগ এনজয় করব। সব সময় জাতীয় দলে খেলতে হবে, জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করলেই আপনি খেলোয়াড়, সে রকম তো নয়। এটা খুব জরুরী নয় যে, আমার নিজেকে এত প্রায়োরিটি দেওয়ার দরকার আছে। আমি নিজেকে এত প্রায়োরিটি দিইও না যে, আমাকে মাঠ থেকে বিদায় দেবেন সবাই, ফুলের তোড়া নিয়ে আসবেন। এটা প্রয়োজনীয় না। আমি যেমন আছি ভালো আছি, এনজয় করছি খেলা। জাতীয় দল অনেক দূরের ব্যাপার।’
সেরা নিউজ/আকিব