আমৃত্যু ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধানের বদল চান পুতিন! - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
আমৃত্যু ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধানের বদল চান পুতিন! - Shera TV
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন

আমৃত্যু ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধানের বদল চান পুতিন!

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সম্প্রতি জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সংসদের বার্ষিক অধিবেশনে সংবিধানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাব তুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজীবন ক্ষমতা ‘কুক্ষিগত’ করে রাখতেই পুতিন এ পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে ধারণা বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক মহলের।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সংবিধানে পরিবর্তনের ওইসব প্রস্তাবনার পরপরই তার নির্দেশে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ ও সরকার।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে মেদভেদেভ জানান, প্রেসিডেন্টের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনগুলো তৈরির সুযোগ করে দিতেই পদত্যাগ করেছেন তিনি ও তার সরকার।

এদিকে এ ঘটনার পরপরই নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, রাজনৈতিক মহল ও বিশ্লেষকরা। রুশ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি ও পুতিনের মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছে তারা। পুতিন কেন সংবিধানে পরিবর্তনের প্রস্তবা তুলছেন, কেনইবা রাতারাতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও তার ক্যাবিনেট পদত্যাগ করলো, এসব নিয়ে সাতপাঁচ ভাবতে শুরু করেছে সবাই।

ওই ঘটনার পরপরই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম নিউজ.কম.এইউ এক প্রতিবেদনে জানায়, পুতিনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রস্তাব তোলার পরপরই রুশ ক্যাবিনেট পদত্যাগ করেছে। আজীবনের জন্য ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেই পুতিন সংবিধানে বিভিন্ন পরিবর্তনের প্রস্তাব তুলেছেন।

খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সংবিধান অনুসারে ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হতে পারবেন না পুতিন। কিন্তু, তাই বলে তিনি দেশের রাজনীতিতে নিজের প্রভাব হাতছাড়া করতে চান না। তা নিশ্চিত করতেই সংবিধানে বিভিন্ন পরিবর্তনের প্রস্তাব তোলা হয়েছে।

গত বুধবার (১৫ জাআনুয়ারি) সংসদের বার্ষিক অধিবেশনে ৮০ মিনিটের ওই বক্তব্যে পুতিন যেসব প্রস্তাব তোলেন তাতে সরকারের অভ্যন্তরীণ অনেক কর্মপন্থার ধরন বদলে যাবে। সংসদ, সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা তুলেছেন তিনি।

অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানদের নিয়োগের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতিকে আগের চেয়ে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবও তোলেন তিনি। এছাড়া সংবিধানে স্টেট কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন পুতিন।

সেদিন এসব পরিবর্তন কেন প্রয়োজন তার কিছু ব্যাখ্যাও দেন তিনি। কিন্তু, বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরও ক্ষমতাকেন্দ্রে নিজের উত্তরাধিকার ধরে রাখতেই এসব পরিবর্তনের প্রস্তাব তুলেছেন পুতিন। এসব পরিবর্তন আনা হলে তিনি প্রেসিডেন্ট না থাকলেও নেপথ্যে থেকে রুশ রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। মূলত তারই অংশ হিসেবে পুতিনের নির্দেশে সরে গেছে মেদভেদেভের সরকার।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করলেও মেদভেদেভকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতাকেন্দ্র নব্যসৃষ্ট সিকিরিটি কাউন্সিলের নেপথ্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে।

রাজনীতির এতোসব মারপ্যাঁচে আর পট পরিবর্তনে রাশিয়ার ব্যাপারে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিশ্ববাসীর। এতোসবের  ভেতর দিয়ে পুতিন মূলত কী করতে চাইছেন, প্রশ্ন সবার।

পুতিন চান ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’

বিভিন্ন বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, পুতিন মোটেও তৃতীয় দফায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এসব করছেন না। তিনি নিজেই তেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু, ৭১ বছর বয়সী এ নেতা প্রেসিডেন্ট না হলেও ক্ষমতাকেন্দ্রে নিজের উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে চাইছেন। যাতে করে নেপথ্যে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন তিনি।

বিশ্লেষকদের ধারণা- প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ফুরালে পুতিন হয় প্রধানমন্ত্রী হবেন, নাহলে নব্যসৃষ্ট প্রবল প্রতাপশালী স্টেট কাউন্সিলের প্রধান হবেন।

পরেরটি, অর্থাৎ স্টেট কাউন্সিলের প্রধান হলে তিনি দেশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবেন। পুতিনই এই স্টেট কাউন্সিল প্রতিষ্টা করেন। এ কাউন্সিল প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে ও দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সিদ্ধান্ত নেয়।

এ ব্যাপারে মস্কোভিত্তিক সেন্টার ফর কারেন্ট পলিসি সংস্থার বিশ্লেষক ওলেগ ইগনাতোভ সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে পুতিন স্টেট কাউন্সিলের প্রধান হওয়ার পথই বেছে নেবেন।

‘যদি এটা হয়, তাহলে এও সম্ভব যে, রাশিয়ার প্রশ্নে পুতিনের কথাই হবে শেষ কথা। আর এতে করে সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

অন্য বিশ্লেষকদের কথা হলো, পুতিন কোন পদ নেবেন সেটা বড় কথা নয়, আসল কথা হলো, তিনি রাশিয়ার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নিয়ামক থাকবেন।

ক্রেমলিন এইডের বিশ্লেষক আলেক্সেই চেসনাকোভ সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, এটি ঠিক স্পষ্ট নয়, পুতিন আসলে আগামীতে কী ভূমিকা নেবেন। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, নম্বর ওয়ান হিসেবেই তিনি নিজের জায়গা নিশ্চিত করবেন।

কেবলমাত্র বিশ্লেষকরাই যে এমন ধারণা করছেন তা নয়, একই ধারণা দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনিরও। তার মতে, পুতিনের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার সর্বেসর্বা, অর্থাৎ একমাত্র নেতা হওয়া। এ লক্ষ্য পূরণে সংবিধানে বদল আনতে তিনি যে কোনো ধরনের ভোটাভুটি বা গণভোটেও যেতে পারেন।

‘পুতিন ও তার শাসনযন্ত্রের একমাত্র লক্ষ্য হলো, আজীবনের জন্য ক্ষমতায় থাকা। যেন সারা দেশই তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। পুতিন আর তার বন্ধুরা এ দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করতে চায়।’

রাশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিখাইল কাসিয়ানোভও একই সুরে কথা বলেন। তিনি মতে, পুতিন চিরকালই ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।

এদিকে মেদভেদেভকে সরিয়ে তার জায়গায় প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে ট্যাক্স প্রধান মিখাইল মিশুস্তিনকে। মিশুস্তিনের কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ক্যাবিনেট প্রধান হিসেবে তিনি শুধু ক্রেমলিনেরই ইচ্ছার পূরণ করে যাবেন।

ভেতরের ঘটনা যাই হোক, একটা ব্যাপার নিশ্চিত যে, রুশ রাজনীতি এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো। আগামীতে এটি কোন দিকে মোড় নেয় তাই এখন দেখার বিষয়।

 

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360