নিজস্ব প্রতিবেদক:
চীন থেকে করোনাভাইরাস কোনোভাবেই যেন বাংলাদেশে আসতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্নিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আরও সতর্কতার সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে। চীন হয়ে যারা দেশে আসছেন, তাদেরও বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র আইন এবং লক্ষ্মীপুর, বগুড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে বলেছেন। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও বন্দরে বিশেষ কোয়ারেন্টাইনের (সঙ্গনিরোধ) ব্যবস্থা যেন রাখা হয়। চীন বা হংকং থেকে যেসব বিমান বাংলাদেশে আসবে, সেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা, চীনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয় এমন পোর্টে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশনাও দিয়েছেন সরকারপ্রধান। সচিব বলেন, চীনে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ডে-কেয়ার সেন্টারে নিরাপত্তা ঘাটতিতে ১০ লাখ টাকা জরিমানা : শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রে (ডে-কেয়ার সেন্টার) নিরাপত্তা ভঙ্গ করা হলে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। এভাবে অন্যান্য শর্ত ভঙ্গ করলে আলাদা জেল-জরিমানা হবে। এর মাধ্যমে আইনের আওতায় আসছে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র। নতুন শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র খুলতে হলে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এমন বিধান রেখে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র আইন-২০২০ এর খসড়ায় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র খুলতে হলে নিবন্ধন পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। তিন বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন যৌথ পরিবার প্রথাটা কমে আসছে এবং নারীরা বেশি বেশি কাজে যুক্ত হচ্ছেন। সে জন্য তাদের ছোট বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের সেবা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, সুরক্ষা, বিনোদন, শিক্ষা, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বা অনুরূপ বিষয়গুলোর নির্ধারিত মান বিধি দিয়ে নিশ্চিত করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর আলাদা জায়গা রাখতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্যও দিবাযত্নকেন্দ্রে বিশেষ অবকাঠামো সুবিধা রাখতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, চার ধরনের শিশু দিবাযত্নকেন্দ্রের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো- সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত; সরকার অথবা সরকারি কোনো দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা অথবা কোনো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা কর্তৃক বিনামূল্যে পরিচালিত; ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা বা সংঘ বা সমিতি বা করপোরেট সেক্টর বা শিল্প খাতের অলাভজনক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
লক্ষ্মীপুর ও বগুড়ায় হচ্ছে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় : লক্ষ্মীপুর ও বগুড়ায় দুটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। এ জন্য ‘লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’ এবং ‘বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, লক্ষ্মীপুর জেলায় লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বগুড়া জেলায় বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়। দুটি খসড়া আইনে ৫৫টি ধারা রয়েছে।
গণতন্ত্র সূচকে এগিয়ে থাকায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন : গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি হওয়ায় মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়। বৈঠকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে প্রথমে আলোচনার সূত্রপাত করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। পরে এ বিষয়ে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মণি কথা বলেন।
সেরা নিউজ/আকিব