ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে নভেলা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ডিসেম্বর প্রথম সতর্ক করা চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং মারা গেছেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩৪ বছর বয়সী লি’র মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি টুইট করেছে। এতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লি’র মৃত্যু সংবাদ জানাচ্ছি। নভেলা করোনাভাইরাস নিয়ে তিনি যে কাজ করে গেছেন এজন্য তাকে আমাদের সবার স্মরণ রাখা উচিত।’ খবর সিএনএনের।
সম্প্রতি চিকিৎসক লি গ্লুকোমায় আক্রান্ত এক নারীর চিকিৎসা করার সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি জানতেন না যে ওই নারী এ ভাইরাসে আক্রান্ত।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর লি চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েবোতে জানান, প্রথমে তার কাশি শুরু হয়েছিল। পরদিন তার জ্বর এসেছিল। দুই দিন পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক লি গত বছরের ডিসেম্বর মাসে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে কাজ করছিলেন। সে সময় তিনি সাতজনের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখতে পান। প্রথমে লি ভেবেছিলেন, এটি সার্স ভাইরাস এবং এর সংক্রমণ উহানের হুয়ানান সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে হয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্তদের তার হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
৩০ ডিসেম্বর লি তার ফেলো চিকিৎসকদের একটি চ্যাট গ্রুপে দেওয়া বার্তায় করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক করেন ও এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রতিরোধমূলক কাপড় পরার পরামর্শ দেন। লি তখনও জানতেন না যে, এই করোনাভাইরাস একেবারেই নতুন।
ডিসেম্বর মাসে করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করার সময় পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরোর কর্মকর্তার সঙ্গে সফর করেন লি। তারা তাকে একটি চিঠিতে সই করতে বলেন। ওই চিঠিতে লি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা মন্তব্য করার অভিযোগ করে বলা হয়, এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের কথা বলে তিনি সমাজের ক্ষতি করছেন। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ওই সময় যে আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল লি তাদের মধ্যে একজন।
এরপর জানুয়ারি মাসের শেষদিকে লি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা জানিয়ে একটি চিঠি দেন। এ সময়ের মধ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু ততোদিনে দেরি হয়ে যায়।
সেরা নিউজ/আকিব