ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক হাজার যুগল গণবিয়েতে যোগ দিয়েছে। শুক্রবার সিউলের উত্তরপশ্চিমের গ্যাপিয়াংয়ের চেয়ং শিম পিস ওয়ার্ল্ড সেন্টারে এই অনুষ্ঠান হয়েছে।- খবর রয়টার্সের
আয়োজকরা বলছেন, এতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার যুগলই প্রথমবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়েপড়া করোনাভাইরাসের ছায়া এই গণবিয়েতেও ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন চার্চের কর্মীরা উপস্থিতদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও সার্জিকাল মাস্কসহ নানান উপকরণও রেখেছিলেন।
এতে সবার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। অবশ্য এরপরও অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বেশিরভাগ যুগলকে মাস্ক ছাড়াই দেখা গেছে।
১৯৫৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার এ চার্চটি প্রতিষ্ঠা করে মুন নিজেকে ও স্ত্রীকে মেসিয়াহ ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৬১ সাল থেকে ২০০২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার অধীনেই এ গণবিয়ে হতো।
এদিকে চীনকে বর্তমানে অচল করে রেখেছে করোনাভাইরাস। বিশেষ করে মধ্য হুবেইপ্রদেশকে। উট, গবাদিপশু, বিড়াল ও বাদুড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর দেহে পাওয়া ভাইরাসের একটি বড় পরিবারের অংশ এই ভাইরাস।
সংক্রমণের নির্দিষ্ট সূত্র বের করে নিয়ে আসতে এটির জিনগত শাখার বিশ্লেষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে সিভিট ক্যাট ও উট থেকে সার্স এবং মার্সের মতো আলাদা দুটি করোনাভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করেছে। নতুন এই করোনাভাইরাস মানুষের হাঁচি, কাশি ও শ্বাসপ্রশ্বাসে নির্গত বস্তু থেকে অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনাভাইরাস মহামারী ছড়িয়েপড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে গত ৩০ জানুয়ারি। প্রথম দিকে এ প্রাদুর্ভাবের তীব্রতা আড়াল করতে মারাত্মক কঠোর ছিল চীনা সরকার।
কাজেই এ ভাইরাস যাতে বিশ্বের অন্য প্রান্তগুলোতে ছড়িয়ে না পড়ে; তা রোধে প্রাথমিকভাবে তাদের পর্যাপ্ত উদ্যোগ ছিল না। উহান থেকে ছড়িয়েপড়া এই মহামারী এখন বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়।
এতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজারে বেশি। মারা গেছেন ৬৩৬ জন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই ভাইরাস মহাদেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ভাইরাস প্রতিরোধের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রাদুর্ভাবটির বিস্তার রোধে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে, বিমানবন্দরে কঠোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চীন থেকে পণ্য আমদানি ও লোকজনের ভ্রমণে ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করে দিয়েছে।
কীভাবে নিরাপদ থাকতে হবে, নাগরিকদের সেই শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি টিকা উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ চেষ্টায় চীনে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে বিভিন্ন দেশ। এসবের মধ্যেও করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ একটি এলাকা ব্যাপক অবহেলার মধ্যে রয়েছে। সেটি হচ্ছে– চীনা অধিকৃত পূর্ব তুর্কেস্তান। চীনের এই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি জিনজিয়াং উইঘুর নামেও পরিচিত।
অঞ্চলটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৩২ জন শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি চীন সরকার নিশ্চিত করেছে। কিন্তু সত্যিকার আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেরা নিউজ/আকিব