সেরা ইতিহাস ডেস্ক:
১৯৪৩ সালে হওয়া বাংলার দুর্ভিক্ষের পেছনে প্রাকৃতিক কারণ খুঁজে পায়নি ভারতীয় ও মার্কিন গবেষকদের একটি দল। অর্থাৎ, ভয়াবহ ওই দুর্ভিক্ষের জন্য আবহাওয়া নয় বরঞ্চ তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের অমানবিক নীতিই দায়ি ছিলো। তার নীতির কারণে সৃষ্টি ওই দুর্ভিক্ষে সেসময় প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। নতুন এ গবেষণাটি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার নামের একটি জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষকরা এ জন্য ভারতের ইতিহাসে হওয়া ৬টি বড় দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর মধ্যে ছিলো, ১৮৭৩, ১৮৭৬, ১৮৭৭, ১৮৯৬-৯৭, ১৮৯৯ ও ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ। গবেষকরা এ জন্য এই ৬ বছর ভারতের মাটির আদ্রতা পরিমাপ করেন। এ থেকে সে বছরের বৃষ্টিপাত ও উচ্চ তাপমাত্রার বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
গবেষণায় পাওয়া যায় যে, প্রথম ৫টি দুর্ভিক্ষের জন্য মূলত এ অঞ্চলের খরাই দায়ি ছিলো। দুর্ভিক্ষের বছরগুলোতে বৃষ্টিপাত কম ছিলো এবং ভারতের তাপমাত্রাও ছিলো অন্য বছরগুলোর থেকে বেশি। তবে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের বছর এমন কোনো প্রাকৃতিক বিপর্জয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গবেষকদের একজন বিপল মিশ্রা সিএনএনকে জানান, ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হয়নি। তাই আমরা গবেষকরা সিদ্ধান্ত নিলাম ১৯৪৩ সালের দুর্ভিজ্ঞ নিয়ে গবেষণা করতে। এর আগে অনেক ইতিহাসবিদই এ দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন যে, উইনস্টন চার্চিলের নীতির কারণেই ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। তবে এবার এরপক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমাণও পাওয়া গেলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে এ অঞ্চলের খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের সরবরাহে বিশেষ পরিবর্তন এনেছিলো বৃটিশ সরকার। এরফলে চালের যোগান শূন্য হয়ে গিয়েছিলো। তাতেই খাদ্যাভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ।
সেরা নিউজ/আকিব