অনলাইন ডেস্ক:
বৈশ্বিক আতঙ্ক করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১৬ জনের মৃত্যু ও ৪২ হাজার ৬৩৮ জনের বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটলেও কোনো নাম দেয়া হচ্ছিল না ভাইরাসটির।
নাম না দেয়ায় চীনের বাসিন্দারা এর উৎপত্তিস্থল উহানের নামে একে ডাকছিলেন। অন্যান্য দেশে একে চায়না ভাইরাস বলেও ডাকা হচ্ছে। বিষয়টি উহান শহরবাসী ও চীনের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভাইরাসটিকে ‘নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া’ সংক্ষেপে এনসিপি নাম ডাকার ঘোষণা দেয় চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
তবে নামটি সাময়িক জানিয়ে শিগগিরই নতুন নাম দেয়া হবে বলে উল্লেখ করে তারা।
এবার আনুষ্ঠানিক নাম পেল করোনাভাইরাস। এখন থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে COVID-19 (কভিড-১৯) নামে ডাকা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান তেদরোস আদহানম জানান, নতুন এ ভাইরাস এখন থেকে COVID-19 নামে পরিচিত হবে। এটাই ভাইরাসটির আনুষ্ঠানিক নাম।
এ নামকরণের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ভাইরাসটির নামের CO দিয়ে করোনা, VI দিয়ে ভাইরাস, D দিয়ে ডিজিজ (রোগ) এবং 19 দিয়ে ভাইরাসটি উৎপত্তিসাল ২০১৯ নির্দেশ করা হয়েছে।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সুপারিশকৃত নাম দেয়া হয়েছিল – ২০১৯-এনকভ। তবে সে নাম চূড়ান্ত হয়নি। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছে এ নাম গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
উল্লেখ্য, দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মহামারী রূপ ধারণ করতে যাওয়া ভাইরাসটির যথাযথ নাম দেয়া হয়নি। যদিও প্রথম থেকে একে করোনাভাইরাস বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ভাইরাসটি নতুন বলে অনেকে একে ‘নভেল করোনা’ বলে ডাকছেন। একটি সাময়িকীতে একে ‘২০১৯-এনকভ’ নাম দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এগুলোর কোনোটিই ভাইরাসটির নাম নয়। মূলত করোনাভাইরাস পরিবারের সদস্য বলে একেও এই নামে ডাকা হচ্ছে।
ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ঠাণ্ডাজনিত অসুখের যে কোনো ভাইরাসের নামই করোনাভাইরাস।
এ ভাইরাসের নাম তা হলে করোনাভাইরাস কেন হলো– এ প্রশ্নে অধ্যাপক ক্রিস্টাল ওয়াটসন বলেছেন, ‘প্রাচীন গ্রিক শব্দ করোন থেকে সপ্তদশ শতকের দিকে লাতিন ভাষায় করোনা শব্দটির আগমন ঘটে। এর অর্থ ফুলের মুকুট। আর অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখলে ভাইরাসটির মাথায় মুকুটের মতো স্পাইক বা কাটা দেখা যায়। দেখে মনে হয় যেন রাজমুকুটের ওপর থরে থরে অনেক দণ্ড সাজানো রয়েছে।তাই এদের করোনাভাইরাস নামকরণ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস তথা কভিড-১৯ অন্তত ৩০টি দেশে শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার চীনে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে মারা গেছেন ১০৮ জন। যা ছিল এখন পর্যন্ত একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
ওই ১০৮ জনসহ মঙ্গলবার সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কমে গেছে।
১০ ফেব্রুয়ারি চীনের মূল ভূখণ্ডে নতুন করে দুই হাজার ৪৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যেটি আগের দিনের তুলনায় তিন হাজার ৬২ জন কম।
দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, এতে মোটা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ জন।
সূত্র: আলজাজিরা
সেরা নিউজ/আকিব