থলের বেড়াল বেড়োচ্ছে পাপিয়ার - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
থলের বেড়াল বেড়োচ্ছে পাপিয়ার - Shera TV
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন

থলের বেড়াল বেড়োচ্ছে পাপিয়ার

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:  সুনির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই, তবুও স্বল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তি ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া। রাজধানীর ফার্মগেটের ২৮ ইন্দিরা রোডে দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও ব্যক্তিগত গাড়ি, নরসিংদী শহরে দুটি ফ্ল্যাট এবং বাগদী এলাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লটও রয়েছে তার।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) দাবি, অবৈধ পন্থায় এসব বিত্ত-বৈভবের মালিক হন শামীমা নূর পাপিয়া। এ কাজে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮)।

নরসিংদীতে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আর্থিক প্রতারণা, জমির দালালি, সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স প্রদান, গ্যাসলাইন সংযোগ দেয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের এই সাধারণ সম্পাদক। পরে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। পুলিশের এসআই ও বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নামেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পাপিয়া-সুমন দম্পতি।

র‌্যাব-১ এর অভিযানে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোপনে দেশত্যাগের আগে পাপিয়া-সুমন দম্পতিসহ চারজনকে অবৈধ অর্থপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল শনিবার গ্রেফতারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং রোববার ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়।

papia

এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮নং ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব।

তিনি বলেন, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া-সুমন দম্পতির বর্তমান সম্পদ ও বিলাসবহুল জীবনযাপন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে। সুনির্দিষ্ট পেশা না থাকা সত্ত্বেও তারা স্বল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তি ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ফার্মগেট ২৮ ইন্দিরা রোডে তাদের দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদী শহরে দুটি ফ্ল্যাট, বিলাসবহুল ব্যক্তিগত গাড়ি এবং নরসিংদীর বাগদী এলাকায় দুই কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লট আছে বলে জানা গেছে।

papia

এছাড়া তেজগাঁও এফডিসি গেটসংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বে তাদের ‘কার একচেঞ্জ’ নামক গাড়ির শোরুমে প্রায় এক কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে এবং নরসিংদী জেলায় ‘কেএমসি কার ওয়াস অ্যান্ড অটো সলিউশন’ নামক প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে-বেনামে অনেক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান অব্যাহত আছে।

শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধিকাংশ সময় তাদের রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করতে দেখা যায়। সবশেষ গত বছরের ১২ অক্টোবর এবং চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারা বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৫৯ দিন হোটেল ওয়েস্টিনের কয়েকটি বিলাসবহুল রুমে অবস্থান করেন এবং আনুষঙ্গিক খরচসহ মোট ৮১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৮.৩১ টাকা নগদ পরিশোধ করেন।

তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রকৃত উৎস জানতে চাওয়া হলে পাপিয়া-সুমন দম্পতি সন্তোষজনক কোনা তথ্য দিতে পারেননি।

papia

প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে র‌্যাব-১ এর সিও বলেন, শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী নরসিংদী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা, জমির দালালি, সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স প্রদান, গ্যাসলাইন সংযোগ দেয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

‘এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা পুলিশের এসআই ও বংলাদেশ রেলওয়েতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নামে ১১ লাখ টাকা, একটি কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার কথা বলে ৩৫ লাখ টাকা, একটি সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স করে দেয়ার কথা বলে ২৯ লাখ টাকাসহ ঢাকা ও নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, তাদের আয়ের আরেকটি উৎস হচ্ছে নারীদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করানো। তারা ঢাকার বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে কম বয়সী মেয়েদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করান। যাদের অধিকাংশই নরসিংদী এলাকা থেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়। এসব অনৈতিক কাজে কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন। পাপিয়ার জব্দ মোবাইল ফোন থেকে অশ্লীল ভিডিও মিলেছে।

পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী নরসিংদী এলাকায় ‘কিউ অ্যান্ড সি’ নামের একটি ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করতেন। যাদের মাধ্যমে তারা নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, মাসোহারা আদায়, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন। তাদের এই ক্যাডার বাহিনীর অনেকের নাম ইতোমধ্যে জানা গেছে, যাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।

papia

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক আরও বলেন, পাপিয়ার এ অবৈধ সম্পদের উৎস নিয়ে সিআইডি কাজ করবে। ইতোমধ্যে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনসহ গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে জাল মুদ্রা রাখা, অনুমোদন ছাড়া অর্থপাচার, অস্ত্র আইনে মামলা হচ্ছে। এছাড়া আয়ের সঙ্গতিবিহীন অর্থ উপার্জন ও ব্যয়ে মানি লন্ডারিং এবং মাদক আইনেও মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাদের সঙ্গে যাদেরই জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ মিলবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেফতার অন্যরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।

 

 

সেরা নিউজ/ আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360