স্পোর্টস ডেস্ক:
ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে কখনোই এক দলে খেলেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে ২০ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ঢাকা লীগে এক দলে খেলতে দেখা যাবে ক্রিকেটের এ দুই সুপার স্টারকে। আসন্ন ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে মাশরাফি ও আশরাফুল খেলবেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে। গতকাল মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, ‘শেখ জামালের অধিনায়ক সোহান (নুরুল হাসান) প্রথমে জানালো, দল তারা করে ফেলেছে। পরে বিদেশি ক্রিকেটার না করে দেয়ায় টপ অর্ডারে একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। মাশরাফিও ফোন দিয়ে বললো, দোস্ত চল এবার আমরা এক দলে খেলি। বন্ধুর সঙ্গে একটা মৌসুম কাটাবো, ভালো লাগছে। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবার ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটে ওর সঙ্গে খেলবো, একটু অন্যরকম ভালো লাগা তো কাজ করেই।’
২০১৩ সালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে সবশেষ এক দলে খেলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোহাম্মদ আশরাফুল।
বিপিএলের ওই আসরে ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হন আশরাফুল। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ক্রিকেট ক্যারিয়ার যখন অস্তগামী তখন মাশরাফি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চেনান নতুন রূপে। বাংলাদেশ হয়ে ওঠে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি। দুজনের ক্যারিয়ারই এখন প্রায় শেষের দিকে। বয়স, ফিটনেস, সময় সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে- খুব অল্প দিনই তারা থাকবেন ২২ গজে। দুজনের শুরুটা প্রায় একই সঙ্গে। আর দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর আবার একই দলের হয়ে খেলতে যাচ্ছেন এই দুই ক্রিকেটার। এদিকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকে ঢাকা আবাহনীতে যোগ দিচ্ছেন মুশফিকুর রহীম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও তামিম ইকবাল প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলবেন।
নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে আশরাফুল ঢাকা লীগের তিন আসরে খেলেছেন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে খেলেছেন কলাবাগান ক্রীড়া চক্রে। শেষ আসরে তাকে দলে ভিড়িয়েছিল ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথম ও শেষ আসরে ভালো করতে পারেননি। তবে ২০১৮ সালে ১৩ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরিতে ৬৬৫ রান করেন আশরাফুল। তবে তার দল কলাবাগান নেমে গিয়েছিল প্রথম বিভাগে। অন্যদিকে শেষ দুই আসরে মাশরাফি বিন মুর্তজা খেলেছেন আবাহনী ক্রীড়া চক্রের হয়ে। দুবারই তার দল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বাধিক রানে সাদা বলের ক্রিকেটে আলোচনায় ছিলেন মুশফিকুর রহীম। সমপ্রতি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিতে কদর বেড়েছে তার। সাকিবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার ডিপিএলে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা পারিশ্রমিকে মুশফিককে দলে টেনেছে আবাহনী। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ডিপিএলে রেকর্ড অর্ধকোটি টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন সাকিব। গত মৌসমে ডিপিএলে খেলেননি তামিম, মুশফিক। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দিয়ে তামিমের পারিশ্রমিক ছাড়িয়ে যাচ্ছে অর্ধকোটি টাকা। গতবার ডাবল সেঞ্চুরিতে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ইতিহাস রচনা করেও আবাহনীতে জায়গা হয়নি সৌম্য সরকারের। সৌম্য সরকারকে দলে পেতে ৪০ লাখ টাকা গুনছে গাজী গ্রুপ। মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ম্যাচ প্রতি ৩ লাখ টাকা চুক্তি করেছে। মাহামুদুল্লাহ নিজেই নাকি এ ধরনের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন। সর্বশেষ বিপিএলে যেখানে আইকন ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক প্লেয়ার্স ড্রাফটে নির্ধারিত হয়েছিল ৫০ লাখ টাকা। ডিপিএলে দলবদল এবার উন্মুক্ত হওয়ায় সেই অংক গেছে ছাড়িয়ে। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে বিদেশি ক্রিকেটাররা এই প্রথমবার খেলতে পারছেন না বলে ট্রফি জয়ের লড়াই জমিয়ে তুলতে এবার দেশি তারকাদের দলে পেতে বিগ বাজেটের দল গড়ছে ক্লাবগুলো। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জে ভারত সফরে টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করা নাঈম শেখের সম্মানী ডিপিএলে স্পর্শ করেছে ৪০ লাখ টাকা। মাঝারি মানের ক্রিকেটারদের সম্মানীর অংকও এবার ৩০ লাখের ঘরে।
সেরা নিউজ/আকিব