ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
সব নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী নেতা মুহিউদ্দীন ইয়াসিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দেশটির অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। এসময় দেশটির রাজা সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুহিউদ্দিন।
শনিবার সকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মালয়েশিয়ার রাজা নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুহিউদ্দীনকে বেছে নেন।
পরে রাজকীয় দফতর থেকে মুহিউদ্দীনের নাম ঘোষণা করা হয়।
দেশটির প্রবীণ রাজনীতিবিদ আনোয়ার ইব্রাহীম ও অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের মধ্যে এ নিয়ে তুমুল লড়াই চলছিল।
যদিও দুজনেই দাবি করছিলেন, দলের সমর্থন তাদের পক্ষেই রয়েছে। এক সময় প্রধানমন্ত্রীত্ব পদ থেকে মাহাথির পদত্যাগ করলে আনোয়ার ইব্রাহীমের সঙ্গে তার জোট ভেঙে যায়।
এছাড়া আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ও উপ প্রধানমন্ত্রী ড. ওয়ান আজিজা ওয়ান ইসমাইল দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন বলে গুঞ্জন উঠে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্ট সদস্যের রায় গেছে মুহিউদ্দীন ইয়াসিনের পক্ষে।
শনিবার বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে মুহিউদ্দীন ইয়াসিনের নাম ঘোষণা করেন রাজা সুলতান আবদুল্লাহ আহমাদ শাহ।
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বেশ প্রভাব বিস্তার করছেন এই রাজনীতিবিদ।
প্রায় ৯ বছর মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য জোহরের পাগোহ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মুহিউদ্দীন। জোহর রাজ্যের একজন জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ধর্মীয় শিক্ষকের ছেলে তিনি।
যে কারণে ছোট বেলা থেকেই স্থানীয়ভাবে সবার দৃষ্টিতে ছিলেন মুহিউদ্দিন। রাজনীতিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে বাবার প্রভাবও সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে।
মালয়েশিয়ায় বেশ পরিচিত মুখ মুহিউদ্দীন। দেশটির ইউনাইটেড ইন্ডিজেনাস পার্টির প্রধান ও ক্ষমতাসীন জোট পাকাতান হারাপানের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট তিনি।
১৯৭৮ সালে পাগোহ থেকে প্রথম পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন মুহিউদ্দীন। এরপর থেকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালে দেওয়ান রাকায়েতের সদস্য হন।
নাজিব রাজ্জাকের দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অরগানাইজেশনের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ছিলেন মুহিউদ্দীন। মাহাথির-রাজ্জাক জোট ন্যাশনাল বরিসনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
মুহিউদ্দীন ইয়াসিন একজন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞও। ইউনিভার্সিটি অব মালায়া থেকে ১৯৭০ সালে অর্থনীতিতে সম্পন্ন করেন মুহিউদ্দীন।
এছাড়া মালায় ভাষা নিয়ে স্নাতক রয়েছে তার।
মাহাথির মুহাম্মদকে ফের প্রধানমন্ত্রী না করা হলেও তার উত্তরসূরিকেই এ পদ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির বলেছেন, আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। বিশেষ করে মুহিউদ্দীনের পক্ষ থেকে এটি বেশি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির আরও বলেন, মুহিউদ্দীন ইয়াসিন দীর্ঘদিন তার এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিলেন। এখন তিনি সেই বিশ্বাসঘাতকতায় সফল হয়েছেন।
সেরা নিউজ/আকিব