ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ভারতের রাজধানী দিল্লির শাহিনবাগে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। অপরদিকে, সেখানে সিএএর পক্ষে বিক্ষোভের ডাক দেয় উগ্র ডানপন্থী হিন্দুসেনা। এমন অবস্থায় শাহিনবাগে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। বিপুলসংখ্যক পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। এ কারণে সেখানে হিন্দুসেনা কর্মসূচি বাতিল করেছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি ও রয়টার্সের।
দিল্লির পুলিশ প্রধান শ্রীবাস্তব বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করা। কর্তৃপক্ষ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর সেখানে পুলিশের এক হাজার সদস্য ও আধা সামরিক বাহিনীর ১২ কোম্পানি সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। লোকজনকে ওই এলাকায় সমবেত না হতে এবং তাদের প্রতিবাদ বিক্ষোভের ইতি ঘটাতে আহ্বান জানানো হয়েছে। যারা এ নির্দেশ লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, সেখানে কোনো রকম জনসমাবেশের অনুমতি নেই।
দিল্লি দক্ষিণ-পূর্ব পুলিশের উপকমিশনার আরপি মীনা বলেন, সময়মতো হস্তক্ষেপের ফলে প্রস্তাবিত বিক্ষোভ বাতিল করা হয়েছে। তবু পূর্ব সতর্কতা হিসেবে সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে হিন্দুসেনা বলেছে, শাহিনবাগের বিক্ষোভের বিরুদ্ধে তারা রোববার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের চাপে তারা সেই বিক্ষোভ বাতিল করেছে।
কলকাতায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতা সফরের দিন বিক্ষোভ প্রদর্শনের কর্মসূচি আগেই ঘোষণা করেছিল বাম ও কংগ্রেস। রোববার শহীদ মিনারে অমিত শাহের সভাস্থল থেকে কিছুটা দূরে বিভিন্ন এলাকায় চলল সেই কর্মসূচি। পথে নামে কিছু ছাত্র সংগঠনও। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন কিছু মুসলিম সংগঠনের সদস্যরাও।
বিমানবন্দর থেকে সভাস্থল পর্যন্ত অমিত শাহের যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে পথে নেমেছিল একাধিক রাজনৈতিক দল। বিমানবন্দর এলাকায় তাকে কালো পতাকা ও কালো বেলুন নিয়ে প্রথমে বিক্ষোভ দেখান কয়েকজন। রামলীলা ময়দান থেকেও একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল বাম ও কংগ্রেস। সঙ্গে যোগ দিয়েছিল কয়েকটি মুসলিম সংগঠনও। কিন্তু মিছিল শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ তা আটকে দেয়।
শহীদ মিনারে অমিতের সভা যখন চলছে, তখন সেখান থেকে কয়েকশ’ মিটার দূরে একাধিক জায়গায় চলছিল বিক্ষোভ কর্মসূচি। উঠছিল ‘অমিত শাহ গো ব্যাক’ স্লোগান। গ্র্যান্ড হোটেলের পাশের গলিতেই জড়ো হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মোতায়েন ছিল পুলিশও। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার। পুলিশের দেয়া ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন ছাত্রছাত্রীরা। শুরু হয় ধস্তাধস্তিও। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সেখানে ব্যারিকেডের মধ্যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন একটি মুসলিম সংগঠনের কয়েকশ’ সদস্য। আচমকাই তাদের দেখে ‘গোলি মারো’ স্লোগান দেন কয়েক জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক। এতে মুহূর্তে উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি আয়ত্তে নেয়। সিএএ ও এনআরসি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অবস্থান চলছে পার্ক সার্কাসে। সেখানেও এদিন বিক্ষোভ দেখানো হয়।
সেরা নিউজ/আকিব