সাংবাদিক আরিফ-ডিসির ফোনালাপ ফাঁস - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
সাংবাদিক আরিফ-ডিসির ফোনালাপ ফাঁস - Shera TV
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪০ অপরাহ্ন

সাংবাদিক আরিফ-ডিসির ফোনালাপ ফাঁস

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়ার পর জনৈক ব্যক্তির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে ফোন করেন সদ্য প্রত্যাহার হওয়া কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন। ফোনে তিনি রিগ্যানকে চাকরি ব্যবস্থা ও মিডিয়াকে অ্যাভোয়েড করার কথা বলেন। মঙ্গলবার তাদের কথোপকথনের অডিও প্রকাশ হলে তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সাবেক ডিসি সুলতান পারভীন সেই ফোনালাপে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়াসহ ভবিষ্যতে সব সময় পাশে তাথার আশ্বাস দেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, এখন মিডিয়াকে অ্যাভয়েড (এড়ানো) করে থাকো। মিডিয়াতে কথা বলো না। তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে আপাতত চিন্তার দরকার নাই। ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তার কিছু নাই, আমরা তোমার পাশে থাকবো। তোমার মামলা প্রত্যাহার করে নেবো। একটু সময় দিও। একটু পজিটিভলি দেখতে হবে।

সুলতানা পারভীন সাংবাদিক আরিফকে ফোনালাপে বলেন, যাই হোক একটি ঘটনা ঘটে গেছে। তুমি একটু রেস্ট নাও, একটু নিরিবিলি থাকো। তোমার মামলা প্রত্যাহার করে দেবো, সমস্যা নাই। একটু সময় দিও। একটা দুইটা শুনানির সময় লাগবে। তোমার চাকরির ব্যাপারেও আমি দেখবো। চাকরির ব্যাপারে কোনও টেনশন করো না।

এ সময় এনকাউন্টারে দেওয়ার হুমকি পাওয়ার মতো অপরাধ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনকাউন্টারের মানসিকতা আসলে আমাদের ছিল না। ওইভাবে ছিল না।

আপনি আমাকে একদিন ডাকতে পারতেন, আমি কি আসতাম না? আরিফ ডিসিকে প্রশ্ন করলে উত্তরে ডিসি বলেন, না, সেটা আসতা। এখনও আসবা, সমস্যা নাই। এখন ধরো যে, কষ্ট তো তুমিও পাচ্ছো, কষ্ট আমিও…হয়ে গেছে যেটা, এটা এদিকে দেখতে হবে একটু পজিটিভলি। এটাই বলার জন্য…।

আরিফুল ইসলামকে চুপচাপ থাকার প্রস্তাব সংক্রান্ত ওই অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, ডিসি সুলতানা পারভীন আরিফের কাছে প্রথমে তার অবস্থা জানতে চান। আরিফ তখন তাকে বেধড়ক মারধর কেন করা হয়েছে তা জানতে চান। একইসঙ্গে তার কাছ থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় স্বাক্ষর নেওয়া চারটি কাগজ ফেরত চান। প্রত্যুত্তরে ডিসি সুলতানা পারভীন বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে ফেরত দেবো…কথা বলে নিজে আমি তোমাকে ফেরত দেবো…যদি নিয়ে থাকে ওরা। কোন কাগজে সই নিয়েছে। তোমার মোবাইল কোর্টের ইয়াতে সই ছিল, বুঝছো।

আরিফ ফোনালাপে বলেন, আমার চোখ বাঁধা অবস্থায় চারটা সই নিয়েছে। উত্তরে ডিসি বলেন, মোবাইল কোর্টের আদেশে তোমার সই নিয়েছে। আচ্ছা, যাই হোক এখন ঘটনা যেভাবে ঘটে গেছে, যা ঘটেছে তুমিও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেইখো। আমি নিজেও আসলে অনুতপ্ত। তুমি একটু রেস্ট নাও। যাও। থাকো। নিরিবিলি একটু থাকো, ঠিক আছে। দেখা যাক আল্লাহ ভরসা। আমরাও তোমার পাশে আছি আর কী।

আরিফ এ সময় ডিসিকে উদ্দেশ করে বলেন, তারা কী উদ্দেশ্যে এই কাজটি করলেন এটা আমার জানা বাঞ্ছনীয়। এবং তারা আমার চারটি কাগজে সই নিয়েছে, কেন নিয়েছে এটা আমার দেখতে হবে। আমার দুই নামেই সই নিয়েছে তারা। এবং আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই চিন্তিত। প্রত্যুত্তরে ডিসি বলেন, তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে এতটা চিন্তিত হওয়ার কিছু নাই। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে, ভালো থাকবা ইনশাল্লাহ।

আরিফ এ সময় আবার চোখবাঁধা অবস্থায় স্বাক্ষর করা কাগজের প্রসঙ্গ তুললে ডিসি বলেন, ‘ঠিক আছে আমি খোঁজ নিয়ে দেখি। এটাতো মোবাইল কোর্টের নির্দেশনাতেই ছিল। অন্য কিছুতে নেয়নি। আর তোমার বিষয়ে অত ইয়া তো আমাদের…যাই হোক…ঘটনাটা ঘটেছিল।’

শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নির্দেশে সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর) নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ৪০ জনের একটি দল বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাসার দরজা ভেঙে ঢুকে তাকে মারধর করে প্রথমে এনকাউন্টার দেওয়ার (গুলি করে হত্যার) হুমকি দেয়। সেখান থেকে তাকে তুলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে চোখ বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। এরপর সাজানো মামলায় ৪৫০ গ্রাম দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা সঙ্গে দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় অধূমপায়ী আরিফকে। চোখ বাঁধা অবস্থাতেই চারটি কাগজে স্বাক্ষরও করতে বাধ্য করা হয় তাকে।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360