স্পোর্টস ডেস্ক:
৩রা এপ্রিল ২৫ বছরে পা রাখবেন ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ। প্রতিটি জন্মদিনেই ক্রিকেট তারকা ছেলেকে বিভিন্ন উপহার দেন বাবা আবদুর রশিদ মনু। তবে এবারের জন্মদিনে বাবার কাছে ব্যতিক্রমী এক উপহার চাইলেন তাসকিন।
করোনায় দেশের মানুষ ভুগছে অর্থকষ্টে। মধ্যবিত্ত পরিবার মুখ ফুটে বলতে পারছে না তাদের কষ্টের কথা। তাই নিজের জন্মদিনে উপহার হিসেবে সব ভাড়াটিয়ার এক মাসের ভাড়া মওকুফ করে দিতে বাবাকে অনুরোধ জানান তাসকিন।
তার বাবাও রাজি হয়েছেন। বিভিন্ন সম্পত্তি থেকে মাসে এক লাখেরও বেশি টাকা ভাড়া পান আবদুর রশিদ। তা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাসকিন। জাতীয় দলের এই তারকা পেসার বলেন, ‘আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার করোনায় ভীষণ কষ্টে দিন যাপন করছে। তবে কখনো কারো কাছে কিছু চাইতে পারে না তারা। আমার বাবার যে সম্পতি আছে সেখান থেকে মাসে এক লাখেরও বেশি ভাড়া আসে। আমি বাবাকে অনুরোধ করি যে এবার আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে সেই ভাড়া যেন তিনি মাফ করে দেন।
এপ্রিলের ৩ তারিখ আমার জন্মদিন, বাবাও আমার কথায় রাজি হয়েছেন। আসলে এমন নয় যে আমাদের অঢেল আছে। তবে আমি যদি এক মাস ঠিকমতো খেলতে পারি সেই টাকা আল্লাহ আমাকে জোগাড় করে দেবেন। আমি মনে করি এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো উচিত, যারা কারো কাছে চাইতে পারে না।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা এরই মধ্যে খেটে খাওয়া মানুষের সাহায্যার্থে গড়া তহবিলে দিয়েছেন। তার বাইরেও অনেক ক্রিকেটার নিজের সাধ্যমত দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে তাসকিন বলেন, ‘আমি বাসা থেকে বের হচ্ছি না। কিন্তু বুঝতে পারছি যে অনেক মানুষই কাজ করতে পারছে না। বিশেষ করে যারা একেবারেই গরীব। আমি ও আমার বাবা নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের সহযোগিতা করার করার চেষ্টা করছি। কিছু কিছু বিষয় কাউকে না জানিয়েও করেছি। আমি মনে করি, এমন সময়ে প্রতিটি বিত্তবান বা যার দেয়ার সামর্থ্য আছে তাদের এগিয়ে আসা উচিত।’
ভাড়া মওকুফ করার বিষয়টি প্রকাশ করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাসকিন বলেন, ‘আমি আসলে বিষয়টি কাউকে জানাতে চাইনি। তবে পরে মনে হলো এটি দেখে বা শুনে যদি অন্যরাও সাধ্যমত এগিয়ে আসে, তাহলে এমন অনেক পরিবারের উপকার হবে যারা সাহায্যের কথা লজ্জায় মুখ ফুটে বলতে পারে না। দেশের প্রতিটি মানুষের এখন মানবিক হওয়া উচিত। মনটা বড় করে সবাই যেন বিপদে পাশে দাঁড়ায়- এই প্রার্থনা করি।’
তাসকিন দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, করোনার দিনগুলোতে যেন তারা সাবধান ও সতর্ক থাকে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকেই জানি এ ভাইরাসের কোন ঔষধ নেই। কবে তা আসবে সেটিও কেউ জানে না। তবে আমরা যদি সতর্ক থাকি তবে এ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবো। অবশ্যই সরকারের নির্দেশ মেনে সকলের ঘরে থাকা উচিত। প্রয়োজন ছাড়া দয়া করে কেউ বের হবেন না।
আমরা নিজেরা নিরাপদে থাকলে পরিবারের সদস্যরাও নিরাপদে থাকবে। বাসায় এসে নিয়ম মেনে হাত ধুই। সাবান, স্যানিটাইজার যা আছে ব্যবহার করি। থুতু-কাশি যেখানে-সেখানে না ফেলি। সচেতনতাই পারে আমাদের বাঁচাতে। আশা করি দ্রুতই আল্লাহ আমাদের বিপদ থেকে রক্ষা করবেন।’
সেরা নিউজ/আকিব