ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে আরও ৬৮৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যা এই মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট ৩ হাজার ৬০৫ জনের প্রাণহানি ঘটল।
শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে একদিনে সর্বোচ্চ ৬৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গতকাল দেশটিতে ৫৬৯ জন মারা যান করোনায়। যা আগের দিনের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি ছিল।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা পর্যন্ত এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৮৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৮ হাজার ১৬৮ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শরীরে এখনও করোনার মৃদু উপসর্গ আছে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। শুক্রবার আইসোলেশন থেকে বের হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জনসনের শরীরে এখনও মৃদু উপসর্গ আছে। গত ছয়দিন ধরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও দেশটির মন্ত্রিসভার আরও তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্কটিশ মন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে গেছেন।
এর আগে ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে যান। বুধবার দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, প্রিন্স চার্লস করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।
অন্যদিকে, দেশটির অন্তত ৭০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের গ্রেট অর্মন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৮ এবং মারা গেছেন ৫৫ হাজার ১৯৫ জন। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৩৩২ জন।
এদিকে, প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিন কিংবা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব পিটসবুর্গের একদল বিজ্ঞানী করোনার কার্যকরী ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করেছেন।
তারা বলেছেন, এই ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে ইঁদুরের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর ভাইরাসের লড়াইয়ে ইঁদুরের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন পেলে শিগগিরই ভাইরাসটি করোনার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন এই বিজ্ঞানীরা।
সেরা নিউজ/আকিব