সাংবাদিকের প্রশ্নে নাস্তানাবুদ ট্রাম্প - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
সাংবাদিকের প্রশ্নে নাস্তানাবুদ ট্রাম্প - Shera TV
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিকের প্রশ্নে নাস্তানাবুদ ট্রাম্প

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২০

সেরা নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের হানায় বিধ্বস্ত যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। এই অবস্থায় দেশবাসীকে পথ দেখানোর বদলে নিজের ঢাক পেটাতেই ব্যস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েকদিন ধরে তিনি নিয়মিত টিভির পর্দায় আসছেন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে। এ ছাড়া প্রতিদিন করোনা নিয়ে ব্রিফ করছেন। যেখানে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দেওয়ার কথা, সেখানে মঞ্চের আলো কাড়ছেন ট্রাম্প।

কোনো দিশা দেখাতে পারছেন না ট্রাম্প। করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বা গত কয়েক দিনে আমেরিকায় কাজ হারানো লক্ষ লক্ষ বেকারকে কোনো বার্তা দিতে পারেননি তিনি। দেশবাসীকে অবশ্য বিনোদনে বঞ্চিত করেননি ট্রাম্প। সাংবাদিকদের প্রতি একের পর এক আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন তিনি। কয়েকটি বিশেষ সংস্থা ছাড়া সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক কখনও খুব একটা মধুর বলে শোনা যায়নি। করোনা-আবহে সেই তিক্ততা আরও বেড়েছে। এমনকি, ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়ছেন না প্রেসিডেন্ট।

করোনা-আবহে পারস্পরিক দূরত্ব বজার রেখে অল্প কয়েকজন সাংবাদিককে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। তাকে প্রশ্ন করেছিলেন একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক জোনাথন কার্ল।ট্রাম্প অবশ্য উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনই বোধ করেননি। উল্টে কার্লকে বলেছেন, ‘আপনি খুবই খারাপ সাংবাদিক। আপনি অপমান করছেন।’ কাউকে বলেছেন ‘খারাপ, ভয়ঙ্কর’, কাউকে আবার হুমকির সুরে বলেছেন, ‘ভয় দেখাবেন না।’ তবে প্রিয় চ্যানেল ও পছন্দের সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে হতাশ করেননি। বিপদের দিনেও প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রেসিডেন্টকে নেটফ্লিক্সের সিরিজ় নিয়ে প্রশ্ন করে চমকে দিয়েছেন অন্য সাংবাদিক এমনকি ট্রাম্পের সহকারীদেরও। হেসে জবাব দিয়ে সহজ বলে ছক্কা হাঁকিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও। তবে এবার ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়লেন এক সাংবাদিক।

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডাও হয়। সিবিএস হোয়াইট হাউসের সংবাদদাতা পলা রেড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি বলেন, চীনে জানুয়ারির শেষের দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন বাড়ছিল, তখনই ট্রাম্প প্রশাসনকে সতর্ক করেছিল দেশটির রোগনিয়ন্ত্রণ সংস্থা। মার্কিনদের চীন ভ্রমণে সতর্ক করার কথাও তারা জানিয়েছিল। তবুও এটা মান হয়নি। ১৩ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি কেন? প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যর্থতা এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের ঘাটতির বিষয়ে প্রশ্ন করেন এই সাংবাদিক। প্রশাসন ফ্রেব্রুয়ারিতে কী করেছে তারও জবাব চান তিনি। এমন প্রশ্নে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েন ট্রাম্প।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে লকডাউন। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লকডািউন প্রত্যাহার নিয়ে রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তিনি চাইছেন, দেশব্যাপী লকডাউন তুলে নেওয়ার সর্বাত্মক ক্ষমতা দেওয়া হোক তাকে। তবে অনেক রাজ্যের গভর্নর ও আইন বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এমন দাবির ঘোর বিরোধী।

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ‘সর্বাত্মক ক্ষমতার’ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে রীতিমতো কথা কাটাকাটি হয়েছে তার।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষমতা রাজ্যের হাতে থাকবে। এই বিধান অনুযায়ী দেশটির পূর্ব ও পশ্চিম উপক’লের ১০টি রাজ্য লকডাউন তুলে নেওয়ার পরকিল্পনা করছে। তবে যেসব রাজ্যের গভর্নর লকডাউন বজায় রাখতে চান তাদের চাপ দেওয়ার এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই।

ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া অর্থনীতির চাকা আবার কীভাবে সচল করা যায় সে পরিকল্পনা করছে তার প্রশাসন।

আগামী ১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনো জায়গায় ১০ জনের বেশি জড়ো না হতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাংবাদিকরা এক পর্যায়ে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, যে লকডাউনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের গভর্নররা নিয়েছেন তা প্রেসিডেন্ট তুলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখেন কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ চটে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, তখন সমস্ত ক্ষমতাই তার হাতে থাকে।’

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাজ্য বা স্থানীয় পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার এখতিয়ার কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নেই।

এক পর্যায়ে ট্রাম্প চীনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,  করোনার তথ্য গোপন করার জন্য চীনকে পরিণাম ভুগতে হবে। এ সময় একজন সাংবাদিক যখন বারবার ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন যে, চীনের জন্য কি পরিণাম অপেক্ষা করছে? এই ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন করার পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাকে বলব না। চিন জেনে যাবে। আমি আপনাকে কেন বলব।’

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ছয় লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬৪৪ জনের। ১০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধু নিইউয়র্কে। এ রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৯৪৮ জন।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360