কেমন কাটছে ব্রিটেনের যৌনকর্মীদের দিন - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
কেমন কাটছে ব্রিটেনের যৌনকর্মীদের দিন - Shera TV
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন

কেমন কাটছে ব্রিটেনের যৌনকর্মীদের দিন

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:
লকডাউনে বৃটেনের জনজীবন। জরুরি সেবাখাতে নিযুক্ত কর্মীরা ছাড়া সবাই ঘরবন্দি দিন কাটাচ্ছেন। সবার জীবনে এখন দারুন এক ক্রান্তিকাল। অন্যান্য পেশার লোকজনের মতো বৃটেনের যৌনকর্মীরা পার করছে এক অভূতপূর্ব সংকটকাল। গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে তাদের সংকটের কথা। দাতব্য সংস্থা ও যৌনকর্মী সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বৃটেন জুড়ে যৌনকর্মীরা এক ভয়াবহ ও হতাশ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। লকডাউনের মধ্যেও তারা ক্লায়েন্টদের সঙ্গ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে তাদের জীবন।

ইংলিশ কালেকটিভ অব প্রোস্টিটিউট-এর নিকি এডামস বলেন, আমরা একটি বিশাল সংকটের মুখোমুখি আছি। কেউ বিধিবিধি লঙ্ঘন করে নিজেকে এবং অন্যকে বিপদে ফেলতে চায় না, তবে যারা এখনও আক্ষরিকভাবে কাজ করছেন তাদের অন্য কোনও বিকল্প নেই।
প্রাপ্তবয়স্কদের এক ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য জুড়ে ৮০০ জন যৌনকর্মী সক্রিয় ছিলেন। যাদের মধ্যে লন্ডনেই ছিলেন অন্তত ১৫০ জন।

নিকি অ্যাডামস বলেন, যে তাদের অনেকে কাজ করবে না। কিন্তু তারা এই আশায় ওয়েব সাইটে সক্রিয় ছিল যে, কোন গ্রাহক যদি ফোন বা ওয়েব ক্যাম সেক্সের সন্ধান করেন। কিন্তু যাদের আয় ছিল না, কোনো সঞ্চয় নেই, ঘর ভাড়া ও বিল বাকি ছিল তাদের জন্য পরিস্থিতিটা খুব কঠিন হয়ে উঠেছে। যেসব নারীর এই মুহুর্তে খাবার কেনার অর্থ নেই তাদের অবিলম্বে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। ৩৩ বছর বয়সী সাশা একটি পার্লারে সপ্তাহে তিনদিন তিনঘণ্টা কাজ করতেন বাচ্চারা যখন স্কুলে যেতো। এতে তারা দৈনিক ৪০-৭০ টাকা আয় হতো। এখন ৩৩ বছর বয়সী বলে তার কোনো কাজ নেই । তিনি ইউনিভার্সাল ক্রেডিটের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু যখন সেটি কবে পাবেন তিনি জানেন না।
গত সপ্তাহে, পতিতাবৃত্তি এবং বিশ্বব্যাপী যৌন বাণিজ্যের বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় দল স্বরাষ্ট্র সচিবকে যুক্তরাজ্যে যৌনকর্মীদের নিরাপত্তা দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেছে, হঠাৎ করে আয়ের সুযোগ বন্ধ হবার পর জরুরি সহায়তা সেবা না পেলে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
স্ট্রিসলাইটের নির্বাহী পরিচালক হেলেনা ক্রফট বলেন, লকডাউনে দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ততপরতা শুরু হওয়ার পর নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িতদের একাংশ মাদকাসক্ত। তারা এখন মাদকের নাগাল পেতে মরিয়া। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি পরামর্শ অনুধাবন করে বাড়িতে থাকার কথা। কিন্তু কিছু ক্রেতা পছন্দ অনুসারে কোনো মহিলার দরজায় যাচ্ছে। এতে সে নারী ঝুঁকি নিয়ে নিজেকে আরো বেশী ঝুঁকিতে ফেলছে। কিন্তু অনেকেই অন্য কোন উপায় নেই। এখানে কেউ কাউকে যৌনসেবা ক্রয়ে বাধ্য করছে না।
লন্ডনের নিকটবর্তী লুইশামে থাকেন তেত্রিশ বছর বয়সী সাশা। তিনি দুই সন্তানের জননী। বিগত এক বছর ধরে যখন তার সন্তানেরা স্কুলে যান তখন তিনি যৌনকর্মী হিসেবে একটি পার্লারে কাজ করতেন। তিনি বলেন, আমি বিলাসিতা পছন্দ করি না। কিন্তু আপনার ফ্রিজে যখন খাবার থাকে না, বিশেষ করে যখন বাচ্চারা প্রতিদিন কেবল রুটি আর জ্যাম খেতে চায় না তখন অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হয়। সে অতিরিক্ত অর্থ আয়ই আমাকে এই পথে পরিচালিত করে। সাশা বলেন, লোকজন যখন এই ভাইরাস নিয়ে কথা বলছিল তখনও আমি এর অর্থ নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু এক সময় গ্রাহকের আগমন বন্ধ হয়ে গেল। এখন অনেক মায়ের মতো আমি বাড়িতে কাজ করতে পারবো না। আমি ক্যামিংয়ের (গ্রাহকদের ঘরে আনা) কথা ভাবছিলাম, কিন্তু বাড়িতে বাচ্চা থাকলে কিভাবে সেটা করতে পারি। ফলে আমি ইউনিভার্সাল ক্রেডিটের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কখন সেটা পাবো এবং সেটা ঘরভাড়া পরিশোধের জন্য যথেষ্ট হবে কিনা জানি না। এছাড়া যখন ইউটিলিটি বিলগুলো আসে তখন আমি সেগুলো আমি তাকের মধ্যে রেখে দিয়েছি এবং সেগুলোর কথা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমার সারাদিন কাটে উদ্বেগে। আমি আমার সন্তান ও মাকে নিয়ে চিন্তা করি। আমার মা আমাদের পাশাপাশি আমার বোনকে নিয়ে চিন্তা করে, যে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। আমার মনে হয়, আমি একটি সুতোর উপর বেঁচে আছি, আমি ক্লান্ত এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভীত।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360