ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বৈশ্বিক খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হয়তো খুব শিগগিরই প্রবল খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তবে দুর্যোগ-সংঘাতে ইতোমধ্যেই বিপদে থাকা আফ্রিকায় এর তীব্রতা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনা মহামারি শুরুর অনেক আগে থেকেই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানবসৃষ্ট সংকটে বিশ্বের প্রায় ১২ কোটি মানুষ খাবারের অভাবে ভুগছেন। এরমধ্যে অন্যতম দুর্গত এলাকা হচ্ছে ইথিওপিয়া, কেনিয়া ও সোমালিয়া। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার হিসাবে, এ অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী খরা, একের পর এক ফসলহানি, পাশাপাশি এরচেয়েও বড় বিপদ মরু পঙ্গপালের হানায় খাদ্যশস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে এই তিন দেশের অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বছরের শুরু থেকেই খাদ্য সংকটে রয়েছে।
চলতি মাসে এক প্রতিবেদনে ফুড ক্রাইসিস প্রিভেনশন নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে চাদ বেসিন লেক, লিপ্তাকো-গুর্মা অঞ্চলের মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসো এবং নাইজেরিয়ার কিছু এলাকায় বাপক খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আগামী জুন-আগস্টেই এ অঞ্চলের অন্তত ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ খাদ্য ও পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে।
আফ্রিকার একটি আঞ্চলিক সংগঠনের বিশেষজ্ঞ ইসোফু বাউয়া জানান, এ অঞ্চলের অন্তত পাঁচ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, এখানকার লোকজন কোনোমতে হয়তো খাবার জোগাড় করতে পারে, তবে এর বাইরে অন্য কাজে খরচ করা তাদের পক্ষে কঠিন। যেমন- কেউ যদি অসুস্থে হয়ে পড়ে তবে তার চিকিৎসার জন্য মজুত খাদ্যের কিছু অংশ বিক্রি করতে হবে। অর্থাৎ যেকোনও ধরনের অসুখ-বিসুখ বা বাড়তি খরচই তাদের জন্য বিপদ।
করোনাভাইরাস মহামারি এবং এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও আফ্রিকার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটসের কৃষি, পরিবেশ ও পানি বিষয়ক কমিশনার সেকু সাঙ্গারে বলেন, লকডাউন প্রয়োজনীয় হলেও এর কারণে যেন কৃষিপণ্য বিক্রিতে বাধা না দেয়া হয়। অন্যথায় খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়তে পারে। ফলে সংকট তৈরি হবে এবং খাবারের দাম বেড়ে যেতে পারে।
বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এগেইনস্ট হাঙ্গার সতর্ক করে বলেছে, মহামারির চেয়ে এর পরবর্তী প্রভাব আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। সেসময় ক্ষুধার কারণে ভাইরাসের চেয়েও বেশি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে।
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
সেরা নিউজ/আকিব