ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্যে আবারও বেড়েছে মৃত্যু। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮৭৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৮২ জনে।
গত ১৮ এপ্রিলের পর দেশটিতে করোনায় একদিনে এটিই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি। যা ব্রিটেনে করোনায় সোমবারের প্রাণহানির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। সোমবার দেশটিতে করোনায় মারা যান ৪৪৯ জন।
তবে দেশটিতে হঠাৎ করে মৃত্যুর এই সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে গত শনিবার, রোববার এবং সোমবারের অন্তত ৪৯৩ জন গত ২৪ ঘণ্টার তালিকায় যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস)। এছাড়া মার্চে মারা যাওয়া ৪৩ জনকেও এই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
এনএইচএসের তথ্য বলছে, এই মহামারি শুরু হওয়ার পর ব্রিটেনের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল গত ৮ এপ্রিল। ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল বলছে, দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা যা প্রকাশ করা হচ্ছে; প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার ব্রিটেনের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় বলছে, গত ১০ এপ্রিলের মধ্যেই শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসেই মারা গেছেন ১৩ হাজার ১২১ জন।
কিন্তু দেশটির স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান বিভাগ একই সময়ে মাত্র ৯ হাজার ২৮৮ জনের প্রাণহানির তথ্য দিয়েছে; যা জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে ৪১ দশমিক ২ শতাংশ কম। ব্রিটেনে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৭ হাজার ৩৮২ জনের প্রাণহানির তথ্য দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে সেই সংখ্যা ২৫ হাজারের কাছাকাছি।
বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণার কাজ। করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাজ নিয়ে এই মুহূর্তে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি গবেষণা চলছে; এর মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও চালিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে একটি ভ্যাকসিনের কয়েক লাখ ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। মানবদেহে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করছেন তারা।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনার উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এই মহামারিতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭১ হাজার ৮১০ জন মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ৩ হাজার ৪৭০ জন। তবে চিকিৎসা শেষে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮৩ জন।