ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান। এ সময়ে বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাস মহামারিতে আরোপিত লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। বেশির ভাগ দেশেই রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলতের তারাবীহ নামাজের ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ঘরেই তারাবীহ নামাজ আদায় করতে। পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববীতে শুধু ধর্মীয় নেতারা ও সেখানকার স্টাফরা নামাজ আদায় করতে পারবেন। বাইরের সাধারণ মুসল্লিদের এখানে নামাজ আদায় করার অনুমতি দেয়া হয় নি। শিথিল করা হয়েছে কারফিউ। রমজানের সময় মুসলিমদের কাছে জেরুজালেমের ওল্ড সিটিতে অবস্থিত তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মান ও পবিত্র স্থাপনা আল আকসা মসজিদ ও ডোম অব রক সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ থাকবে।
অনলাইন বিবিসি ও গালফ নিউজ এসব খবর দিয়ে আরো বলেছে, আল আকসা মসজিদের পরিচালক এ নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসির সঙ্গে। তিনি বলেছেন, এই মসজিদে ১৪০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম তারাবীহ নামাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খুব কঠিন এবং এতে আমাদের হৃদয়ে প্রচ- বেদনা বোধ করছি। তবে ধর্মীয় নেতারা এবং প্রহরীরা এখানে তারাবীহতে অংশ নিতে পারবেন। এই নামাজ অনলাইনে সম্প্রচার করা হবে।
ওদিকে মিশরে মসজিদ বন্ধ রাখা ও রাতে কারফিউ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি। তিনি বলেছেন, পবিত্র রমজানে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য। যদি এই বিধিনিষেধ অমান্য করা হয় এবং করোনা সংক্রমণ আরো খারাপের দিকে যায়, তাহলে আরো কঠোরতা অবলম্বনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাত পবিত্র রমজান উপলক্ষে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লকডাউন শিথিল করছে। এ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে দেশটি এক কোটি খাবার বিতরণ করবে। এ নিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম টুইটারে লিখেছেন, পবিত্র রমজান মাসে সবাইকে খাবার পৌঁছে দেয়া হলো করোনা মহামারির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের সামাজিক অগ্রাধিকার। তার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় দুর্যোগ ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ, সুপ্রিম কমিটি অব ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজঅ্যাস্টার ম্যানেজমেন্ট এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিটি চলাচল বিষয়ে নতুন একটি গাইডলাইন দিয়েছে। বাইরে রাখা হয়েছে কিছু বাণিজ্যিক কর্মকান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরকে। এক বিবৃতিতে ওই কমিটি বলেছে, বর্তমানে সারাবিশ^ যে জটিল পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে তা সত্ত্বেও এই সঙ্কট মোকাবিলায় সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এতে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট শর্তের অধীনে গণপরিবহন (বাস ও মেট্রো), রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে (বুফে ও সিসা বাদ), খুচরা বিক্রয়কারী খাত (মল, হাই স্ট্রিট আউলেট, সোকস), পাইকারি বিক্রির খাত ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক দোকানগুলো কর্মকান্ড চালাতে পারবে। তবে পারিবারিক বিনোদন, সিনেমা, চেঞ্জিং রুম, নামাজ আদায়ের স্থান পরিচালনার অনুমতি থাকবে না। পুল, জিম, সনা ও ম্যাসাজ পার্লার বন্ধ রেখে হোটেলগুলো চালু রাখা যাবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট কর্মশক্তির শতকরা সর্বোচ্চ ৩০ ভাগ উপস্থিতি সাপেক্ষে খোলা রাখা যাবে। বাকিদের কাজ করতে হবে ঘরে বসে।
সেরা নিউজ/আকিব