স্বাস্থ ডেস্ক:
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের কাছে রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তারা রোজা রাখতে চাইলে বেশ কিছু নিয়ম মানা জরুরি।
কারণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ম মেনে ও সময়মতো খাবার খেতে হয়। এ ছাড়া দিনের বিভিন্ন সময় তাদের ওষুধ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ফলে সেহরি ও ইফতারের মধ্যে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার প্রভাব পড়তে পারে তাদের শরীরে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রোজা রাখার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একে আজাদ খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আলীম।
রোজা রাখার জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়-
ডায়াবেটিস পরীক্ষা
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের রোজার আগেই আরেকবার পরীক্ষা করে দেখা উচিত যে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিনা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে নিয়মকানুন মেনে রোজা রাখা যেতে পারে।
হাইপোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি
দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে গিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। তখন প্রচুর ঘাম হয়, বুক ধড়ফড় করে।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এ রকম পরিস্থিতি দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে শরবত বা মিষ্টিজাতীয় কিছু মুখে দিতে হবে। না হলে মৃত্যুঝুঁকিও দেখা দিতে পারে।
ইনসুলিন ও রক্ত পরীক্ষা
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একে আজাদ খান বলেন, বাংলাদেশে একটা ভুল ধারণা আছে যে, ইনসুলিন নিলে বা রক্ত পরীক্ষা করালে রোজা ভেঙে যায়।
তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, নিয়ম অনুযায়ী একজন রোজাদার যেমন ইনসুলিন নেবেন, তেমনি শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করলে নিজেই রক্ত পরীক্ষা করে তার ডায়াবেটিস মেপে দেখবেন।
রোজা থাকার সময় সকালে ও বিকালে নিয়মিতভাবে রক্ত পরীক্ষা করে শরীরের সুগারের অবস্থা দেখে নিতে হবে।
সকালের খাবার ইফতারে আর রাতের খাবার সেহরিতে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আলীম বলেন, রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারের ক্ষেত্রে সহজ পরামর্শ হলো– আপনি সকালে যে খাবারটি খেতেন, সেটি খাবেন সন্ধ্যায় আর রাতে যে খাবারটি খেতেন, সেটি খাবেন সেহরিতে। দুপুরের খাবার রাতে খেতে পারেন।
চিনির পরিবর্তে ফলের শরবত বা ডাবের পানি খান
চিনি বা বাজারের বিভিন্ন ধরনের শরবত বাদ দিয়ে বরং ডাবের পানি বা ফলের শরবত ইফতারিতে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
সেহরিতে ভারী খাবারের পরিবর্তে যতটা বেশি সম্ভব তরল পান করতে হবে। ইফতারির পর থেকে সেহরি পর্যন্ত যতটা বেশি সম্ভব পানি পান করতে হবে।
ব্যায়াম
যেসব ডায়াবেটিস রোগী নিয়মিত ব্যায়াম করেন, রোজা রাখার সময় তাদের নিয়মের কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সন্ধ্যার পর অথবা সেহরির আগে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে পারেন রোজাদার ডায়াবেটিস রোগীরা।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
সেরা নিউজ/আকিব