সেরা নিউজ ডেস্ক:
নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে বিশ্ব জুড়ে। গত ডিসেম্বরে চিনের উহান শহর থেকে এর শিকার ছড়িয়েছে বিশ্বের ১৮৫টি দেশে। বৃহস্পতিবার গোটা বিশ্বে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ৩২ লক্ষ। এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বিশ্ব জুড়ে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৩২ লক্ষ ৪ হাজার ৭০৫। আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৪৭ জনের।
গত মাসের ১১ তারিখ করোনাভাইরাসকে অতিমারি হিসাবে ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তার আগে থেকেই অবশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে করোনা-মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি নিলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর গতিবেগ রোখার চেষ্টা পুরোপুরি সফল্য পায়নি। গোটা বিশ্বে আক্রান্তের নিরিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে ১০ লক্ষেরও বেশি সংক্রমিত হয়েছেন এই ভাইরাসে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হিসেব অনুযায়ী যা বিশ্ব জুড়ে মোট করোনা-আক্রান্তের এক-তৃতীয়াংশ। মার্কিন দেশে আক্রান্তের পাশাপাশি সংক্রমিতদের মৃত্যুর হারও চিন্তার বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে। ইতিমধ্যেই ওই সংখ্যাটা ছুঁয়েছে প্রায় ৬১ হাজার। ভারতীয় সময় দুপুর ৩টে পর্যন্ত আমেরিকায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজার ৯৯৯ জনের সংক্রমিতের। শুধুমাত্র নিউ ইয়র্ক শহরেই মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ৭৬ জনের।
দেশের করোনা-পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পপ্রশাসনের ব্যর্থতাই দায়ী বলে সরব হয়েছেন তাঁর সমালোচকেরা। যদিও আমেরিকায় তথা গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য চিনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত তোপ দেগে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। চিনের বিরুদ্ধে কখনও বাণিজ্য-চুক্তি নিয়ে, তো কখনও মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিপূরণের হুঙ্কার দিচ্ছেন তিনি। ট্রাম্প-সমালোচকদের অবশ্য অভিযোগ, নিজের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতেই এই পন্থা নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন মুলুকে করোনায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ছাড়িয়েছে ভিয়েতনাম যুদ্ধে প্রাণহানির রেকর্ডকে। কিন্তু যে চিন থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, সেই দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ঠিক কত? চিন সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশে এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৯৯৪। ভাইরাসের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৭ জনের। এর মধ্যে শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৫১২। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে এটি চিনের বড়সড় সাফল্য বলেও আখ্যা দিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ দাবি করেন তিনি। হুবেই প্রদেশ এবং তার রাজধানী শহর উহানে এই ভাইরাসকে রুখে দেওয়াটা যে চিনের কঠোর প্রচেষ্টার ফল, সে দাবিও করেন চিনফিং। করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্পের ক্রমাগত হুঙ্কারের আবহে চিনফিংয়ের এই দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই ইউরোপের অন্যান্য দেশেও করোনায় সংক্রমিতদের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সংক্রমিতদের সংখ্যাও উদ্বেগজনক। স্পেনে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৯৯ জন, ইটালিতে ২ লক্ষ ৩ হাজার ৫৯১ জন, ফ্রান্সে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৪৩ জন, জার্মানিতে ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৩৯ জন এবং ব্রিটেনে সংক্রমিত হয়েছেন ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪৪১ জন। ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে ইটালিতে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষের। অন্য দিকে, ব্রিটেনে ২৬ হাজারেরও বেশি সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। ফ্রান্স ও স্পেনে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ হাজারেরও বেশি।
সেরা নিউজ/আকিব