সেরা নিউজ ডেস্ক:
ব্রিটেনের পর এবার নিউইয়র্কেও শিশুদের দেহে রহস্যময় উপসর্গ দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্কের হাসপাতালে ১৫ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এসব শিশুর দেহে বহুমাত্রিক প্রদাহজনিত উপসর্গ দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির স্বাস্থ্য বিভাগ সোমবার এক স্বাস্থ্য সতর্কতায় এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এসব শিশুর দেহের উপসর্গ হয়তো কোভিড-১৯য়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। গত ১৭ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত এসব শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের বয়স ২ থেকে ১৫ বছর।
এসব শিশুদের অনেকের শরীরেই ইতোমধ্যেই করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তবে সব শিশু করোনায় আক্রান্ত নয়। বেশ কিছু শিশুর ক্রমাগত জ্বর, কাওয়াসাকি রোগ বা টক্সিক শক সিনড্রোমের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
কাওয়াসাকি রোগের কারণে ধমণীর প্রাচীরে এক ধরনের প্রদাহ তৈরি হয় এবং হৃৎপিন্ডে রক্তের সরবরাহ কমিয়ে আনে। অনেক ক্ষেত্রেই শিশুরা কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। আবার অনেক ক্ষেত্রে এটা একটি শিশুর মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
বেশ কিছু শিশুকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এছাড়া অর্ধেকের বেশি রোগীর দেহে রক্তের প্রয়োজন হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত নিউইয়র্কে এ ধরনের রোগে কারও মৃত্যু হয়নি।
এর আগে ব্রিটেনেও কিছু শিশুর দেহে খুবই বিরল উপসর্গ দেখা দেয়। এসব উপসর্গ করোনার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা শিশুদের দেহে এ ধরনের উপসর্গকে বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেছেন।
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এনএইচএস থেকে চিকিৎসকদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। লন্ডন এবং অন্য বেশ কিছু স্থানের হাসপাতালে ইনটেন্সিভ কেয়ারে গুরুতর অসুস্থ কিছু শিশুকে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এসব শিশুদের দেহে যেসব লক্ষণ দেখা দিয়েছে সেগুলো খুবই অস্বাভাবিক।
এর মধ্যে রয়েছে ফ্লুর মতো জ্বর এবং দেহের বিভিন্ন জায়গায় প্রদাহ বা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি। এসব শিশুদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে বেশ কিছু শিশুর করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে। কিন্তু অনেকেরই করোনা নেগেটিভ আসার পরেও এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
এসব শিশুদের তীব্র জ্বর, রক্তচাপ কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিয়েছে। কারো কারো পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়ার মতো লক্ষণও দেখা গেছে।
ফলে এখন উদ্বেগ বাড়ছে যে, যুক্তরাজ্যের শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত এক ধরনের প্রদাহজনিত রোগ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, এমনও হতে পারে যে এটা হয়তো এমন এক সংক্রমণ যা এখনো শনাক্ত হয়নি।
তবে এখন নিউইয়র্কেও এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি কোন কোন সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে হেরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়, তাহলে এ ধরণের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ব্রিটেন এবং নিউইয়র্ক ছাড়াও ইতালি এবং স্পেনেও এ ধরনের উপসর্গ দেখা গেছে।
সেরা নিউজ/আকিব