লাইফস্টাইল ডেস্ক:
প্রতিদিন চাল ধুয়ে যে পানিটুকু আপনি ফেলে দেন, সেই পানিতেই নিতে পারেন আপনার চুলের যত্ন। অবাক হচ্ছেন? অবাক হলেও সত্যি যে এই চাল ধোয়া পানিই চুল সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। চাইনিজ বা জাপানি নারীদের চুল সুন্দর হয় কারণ কয়েকশো বছর ধরে তারা মেনে আসছেন এক অভাবনীয় সলিউশন, যার মাধ্যমে তাদের চুল এতটা সুন্দর এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায়।
সেই সলিউশন একেবারেই কঠিন কিছু নয়। চাল ধোয়ার পর যে পানি বের হয় সেই পানি থেকেই পেতে পারেন ঘন কালো লম্বা চুল। তাই এবার থেকে ভাত রান্নার সময়ে চাল ধুয়ে নিয়ে পানিটুকু ফেলে না দিয়ে সেই পানিতেই করে নিন চুলের যত্ন। চলুন জেনে নেয়া যাক-
চুলের বৃদ্ধিতে চাল ধোয়া পানি: হেয়ার মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন চাল ধোয়া পানি বা রাইস ওয়াটার। সেজন্য প্রথমে ভালো করে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তারপর চাল ধোয়া পানি ভালো করে চুলে ঢালতে থাকুন, সঙ্গে করুন হালকা হাতে মাসাজ। এবার ১০ মিনিট মতো মাথায় রেখে দিন এই মাস্ক। এরপর ভালো করে পরিষ্কার পানিতে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার করে এটি অ্যাপ্লাই করতে পারেন এতে চুল বাড়বে তাড়াতাড়ি।
শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার: প্রথমে এক কাপ চাল ধোয়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন এক চামচ আমলা বা সিকাকাই পাউডার। এবার তাতে ১/৪ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন। সেইসঙ্গে চুলের লেন্থ অনুসারে নিন মাইল্ড শ্যাম্পু। ভালো করে মিশিয়ে একটি কাঁচের বোতলে রেখে দিন। ২ সপ্তাহ এটি রেখে দিতে পারেন। এবার এটিকেই শ্যাম্পুর মতো করে ব্যবহার করুন।
হেয়ার সিরাম হিসেবে ব্যবহার: চুলের পুষ্টির জন্য শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ছাড়াও হেয়ার সিরাম লাগানো খুবই প্রয়োজন। এতে চুলের মধ্যে থাকা কেরোটিন পুষ্টি লাভ করে। এক্ষেত্রে অসাধারণ সিরামের কাজ করে থাকে রাইস ওয়াটার। এর জন্য ভাতের মাড় ঠান্ডা করে ভালো করে সারা চুলে লাগিয়ে নিন। তবে সাধারণত সিরাম চুলে লাগিয়ে রেখে দেওয়া উচিত। তা আর পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে ভাতের মাড় যেহেতু একটু আঠালো এবং চটচটে প্রকৃতির হয়, সেহেতু ভাতের মাড় চুলে ১০-১৫ মিনিট মতো রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের গোড়া শক্ত করতে: চাল ধোয়া পানিতে প্রচুর অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে যা চুলের গোড়া মজবুত করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সেই কারণে, চাল ধোয়া পানির সঙ্গে খানিকটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি স্ক্যাল্পে খুব ভালো করে ঘষে ঘষে লাগিয়ে নিন। এরপর ২০ মিনিট মতো রেখে শ্যাম্পু করে ভালো করে গোসল করে নিন। চুলের গোঁড়া মজবুত করে চুল ওঠা রোধ করতে এটি দারুণ কার্যকরী।
ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার: কোকড়ানো চুলের যত্নে ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার ভীষণ উপকারী। এটি তৈরি করাও খুবই সহজ। ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার বানাতে প্রথমে চাল ধুয়ে পানি বের করে নিন। এবার সেই পানি একটি কাঁচের বোতলে ভরে রাখুন। বোতলের মুখ বন্ধ করে কাঁচের বোতলটি দিন কয়েক খোলা জায়গায় রেখে দিন। ৩-৪ দিন পরে পানি থেকে থেকে একটা টক-টক গন্ধ বের হলে পানির বোতলটি রেফ্রিজারেটরে রেখে দিন। এই পানি ২ সপ্তাহ পর্যন্ত রেখে দিতে পারেন। এই রাইস ওয়াটার চুলের জন্য খুবই পুষ্টিকর। বিশেষ করে যাদের কোকড়ানো চুল, তাদের চুলে জট পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে চুলে লাগান ফার্মান্টেড রাইস ওয়াটার। তবে এই পানি সরাসরি চুলে না লাগানোই ভালো। এর সঙ্গে একটু পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দু’বার করে এটি ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করার পর বিশ মিনিটের মতো রেখে তারপর শ্যাম্পু করবেন।
সেরা নিউজ/আকিব