ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ফিলিপাইনে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। শুক্রবারের এই ঝড়ে দেশটির লাখ লাখ মানুষ ঘড় ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন; যেখানে করোনার সামাজিক দূরত্ব মানা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির মধ্যাঞ্চলের সামার দ্বীপের কাছে উপকূলীয় এলাকায় ফুঁসে ওঠে টাইফুন ভংফং। পরে এটি দুর্বল হয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে রাজধানী ম্যানিলার উত্তরের দিকে আছড়ে পড়ে।
করোনাভাইরাসের কারণে লাখ লাখ মানুষ গৃহবন্দি অবস্থায় থাকলেও এই ঝড়ের তাণ্ডবে আশ্রয় শিবিরে যেতে বাধ্য হন তারা। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলেছেন, মধ্যাঞ্চলের বিকোল প্রদেশের ১ লাখ ৭১ হাজার ৭০০ মানুষ এই ঝড়ের কারণে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা কার্লিতো আব্রিজ ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমাদেরকে সবসময় মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্বের বিধান মেনে চলতে হবে। গৃহহীন লাখ লাখ মানুষ চাপে পড়ায় এই নিয়ম কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলেছেন, ঝড়ের আঘাতে বিকোল প্রদেশের চেয়ে সামার দ্বীপ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ায় এখন অনেকেই আশ্রয়শিবির থেকে বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন।
কর্তৃপক্ষ আশ্রয়শিবিরগুলোতে ধারণক্ষমতার অর্ধেক মানুষকে সেখানে রাখার পরিকল্পনা করছে। একই সঙ্গে সামর্থ্যহীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও পরিবারগুলোকে এক জায়গায় রাখার চেষ্টা করছেন তারা।
এছাড়া আগে অনেক জায়গা আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে সেগুলো অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। এতে সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
দুর্যোগ কর্মকর্তা জুনি ক্যাসিলো বলেন, আশ্রয় শিবিরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই এখন প্রকৃত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহামারির কারণে শূন্য হয়ে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষগুলোকে এখন কোয়ারেন্টাইনে সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
দেশটির মধ্যাঞ্চলে ঝড়টি প্রথম আঘাত হেনেছে; কিন্তু এই অঞ্চলটি ফিলিপাইনে করোনার প্রাদুর্ভাবের অন্যতম হটস্পট নয়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৮৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৭৯০ জন।
সূত্র: এএফপি।
সেরা নিউজ/আকিব