ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে দ্রুতগতিতে দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, সংক্রমণের চলমান ধারা চলতে থাকলে আগস্টের মধ্যে ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ছাড়াতে পারে এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি। শুধু তাই নয়, গোটা দক্ষিণ আমেরিকায় আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে করোনা।
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। খবর জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর আমেরিকার করোনা পরিস্থিতিও ভালো নয়। এ মহাদেশে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা এক লাখ পেরিয়ে গেছে। তবে আশার কথা হলো, সেখানে শেষ তিনদিন দৈনিক ৭০০ অতিক্রম করেনি। যা গত কয়েক মাসের হিসাবে বিরল ঘটনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর আমেরিকায় ধীরে ধীরে করোনার প্রকোপ কমার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে সতর্ক না থাকলে ফের এই সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বললেও অর্থনীতির স্বার্থে দেশে স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরিয়ে আনতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ৬ জুলাই স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বেশ ঘটা করে পালন করতে চাইছেন। যদিও কংগ্রেসের বহু নেতাই এর বিরোধিতা করেছেন। এ বিষয়ে তাদের ভাষ্য, এই পরিস্থিতিতে ৬ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান বড় করে না করাই ভালো। হোয়াইট হাউস অবশ্য জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও করোনাকালীন সতর্কতা বজায় রাখা হবে।
এদিকে ইউরোপে করোনার পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। স্পেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ বুধবার থেকে ১০ দিনের শোকদিবস পালন করা হবে। করোনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের স্মরণে এই ১০ দিনের শোকদিবস পালন করা হবে। দেশের পতাকাও থাকবে অর্ধনমিত।
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে গত মঙ্গলবারও দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ঘটেছে। বলা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সে দেশে এটাই করোনায় সবচেয়ে কম বয়সীর মৃত্যু। ৩০ বছর বয়সের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে কুইন্সল্যান্ডে।
তবে দক্ষিণ আমেরিকার চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাজিলের পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় প্রতিটি দেশেই করোনার রেকর্ড প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কলম্বিয়ায় এক হাজার ২২ জনের শরীরে নতুন করে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। পেরুতে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ৮০০ জনের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেখানে মোট আক্রান্ত এক লাখ ৩০ হাজার। আর্জেন্টিনায় এক ধাক্কায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ থেকে ৪৯০।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি হারে করোনায় মৃত্যু হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকায়।
ভারতের পরিস্থিতিও খুব ভালো নয়। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন চলার কথা থাকলেও গোটা দেশেই জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। দোকান-বাজার খুলতে শুরু করেছে। গাড়ি ঘোড়াও রাস্তায় নেমেছে। চালু হয়েছে দেশের ভেতরে বিমান পরিষেবা। চলছে ট্রেন। যার ফলে গত কয়েক দিনে করোনার সংক্রমণ রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে দেড় লাখ। বুধবার সকাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ৩৪৪ জনের।
গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ লাখ ৮৪ হাজার। মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ৫২ হাজার লোকের। সুস্থ হয়েছেন ২৪ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।
সেরা নিউজ/আকিব