নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের রেমডেসিভির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রাজধানী ঢাকাতে অবস্থিত করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ওষুধটি প্রাথমিকভাবে প্রয়োগের পর রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৩ মে) থেকে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর রাজধানীর করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির পাঠাতে শুরু করে।
রেমডেসিভির হাতে পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (২৬ মে) থেকে নিয়ম অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের শরীরে প্রয়োগ শুরু করে।
বুধবার (২৭ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ও করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
রেমডেসিভির প্রয়োগের নিয়ম ও কার্যকারিতার বিষয়ে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে প্রথম দিন করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের দুই ডোজ করে রেমডেসিভির দেওয়া হয়েছে। পরে দ্বিতীয় দিন থেকে এক ডোজ করে দেওয়া হচ্ছে। সর্বোচ্চ একজন রোগীকে ৫-১০ ডোজ করে রেমডেসিভির দেওয়া হবে।
কার্যকারিতার বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, যেহেতু মাত্র রোগীদের ওপর রেমডেসিভির প্রয়োগ হয়েছে, তাই এর কার্যকারিতা বিষয়ে আরও দুই-একদিন পর নিশ্চিত করে বলা যাবে। তবে তারা আশা প্রকাশ করছেন রেমডেসিভির প্রয়োগের ভালো ফলাফলই দেখা যাবে।
কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, আমরা সরকারিভাবে বেক্সিমকোর জেনেরিক রেমডেসিভির হাতে পেয়েছি। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রেমডেসিভির প্রয়োগ করা শুরু করে দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে প্রয়োগের পর রোগীদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে এসব রোগীদের অক্সিজেনসহ অন্যান্য ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। তাই এখনই রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে আর কিছু দিন গেলে বিস্তারিত বলা যাবে।
রেমডেসিভিরে প্রয়োগের বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কেএম নাসির বলেন, আমরা আজ রেমডেসিভির হাতে পেয়েছি এবং আজ থেকেই আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের শরীরের প্রয়োগ করব। রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা বিষয়ে আশাবাদী। তবে প্রয়োগের পর রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এর কার্যকারিতা বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে রেমডেসিভির বিতরণের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখা ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের সংখ্যা ঢাকা বিভাগ অর্থাৎ ঢাকা সিটিতে বেশি। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা গুরুত্বর অসুস্থ হন তাদের অধিকাংশরই চিকিৎসা হয় রাজধানীর করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে। তাই প্রাথমিকভাবে রাজধানীর করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা.আমিনুল হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে রাজধানীর বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে রেমডেসিভির পাঠানো হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশ্বের প্রথম অনুমোদিত জেনেরিক রেমডেসিভির হস্তান্তর করে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে স্যাম্পল ওষুধ তুলে দেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন। বেক্সিমকোর উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের ব্র্যান্ড নাম ‘বেমসিভির’।
পরের দিন রোববার (২৪ মে) এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিডেট ১৩টি হাসপাতালে জেনেরিক রেমডেসিভির সরবরাহ করে। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’ বলে জানায় এসকেএফ কর্তৃপক্ষ।
সেরা নিউজ/আকিব