সেরা নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস শহরে পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ ফ্রয়েডকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল আমেরিকা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ডেরেক চোভিনের কর্মস্থল অর্থাৎ থার্ড প্রেসিঙ্কটে আগুন দেয় বিক্ষোভকারিরা। একইসময়ে ঐ এলাকার শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও জ্বালিয়ে দেয়া হয়। সে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে বাংলাদেশি রাহেল ইসলাম (৪২) এর মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টও।
রাহেল জানান, ন্যায় বিচার পেতে আমার পুরো ভবন আগুনে পুড়লেও আপত্তি নেই। কারণ, ১২ বছর আগে আমার মালিকানায় চালু হওয়া এই রেস্টুরেন্টটি এই এলাকাবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থনে আজকে সকলের প্রিয় একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের সামাজিক অধিকার সুসংহত হলে আমার ব্যবসায়িক পরিবেশেরও উন্নতি হবে।
রাহেল ইসলামের কন্যা হাফসা ইসলাম বলেছেন, প্রথমে আমারও খুব রাগ হয়েছিল। এটি আমার পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস। তবে আমাদের চাওয়া ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে, দায়ী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
রাহেল ইসলাম বলেন, ভবন আবারও নির্মাণ করা যাবে। কিন্তু একজন মানুষকে আবারো তৈরি করা সম্ভব নয়। কমিউনিটি এখনো আমাদের পাশে আছে। আমরা আবারও একত্রে কাজ করে এটি নির্মাণ করব।
সিলেটের মৌলভীবাজার জেলা সদরের বাহার মর্দান গ্রামের রাহেল ইসলাম প্রথমে নিউইয়র্কে ছিলেন। ১৫ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছেন মিনিয়াপলিস সিটিতে। ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক মন্দা চলাকালে ‘গান্ধী মহল রেস্টুরেন্ট’ চালু করেন সেখানে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি অহিংস আন্দোলনের পক্ষে। আর সে কারণেই নিজের রেস্টুরেন্টের নাম রেখেছেন অহিংসা আন্দোলনের নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নামে। রাহেল বলেন, আমি এখনো অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিবো। কিন্তু আমাদের তরুণ প্রজন্ম প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ এবং তাদের ক্ষুব্ধ হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। পরিবারের সকলকে নিয়ে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় মনোনিবেশ করেছি।
বর্তমানে রাহেল তার পুড়ে ছাই হওয়া রেস্টুরেন্টেরই এক কোনায় চুলা বসিয়ে অসুস্থদের জন্য খাবার তৈরি করছেন। তিনি বলেন, কমিউনিটিকে সহায়তার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করছি। আর কোন ফ্লয়েডের প্রাণ এভাবে যাতে না যায় সেজন্যেও সম্প্রতির বন্ধন সুসংহত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেব আমরা।
সেরা নিউজ/আকিব