হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শহরে কারফিউ - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শহরে কারফিউ - Shera TV
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শহরে কারফিউ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১ জুন, ২০২০

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার জেরে দেশটিতে চলমান বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে। টানা ষষ্ঠ দিনের মতো স্থানীয় সময় রোববারও দেশটির প্রায় সবগুলো শহরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ২০টি রাজ্যের ৪০টি শহরে কারফিউ জারি করেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সহিংসতা। রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসের সামনে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া ও লস অ্যাঞ্জেলসে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে রোববার। পুলিশের বহু গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি শহরে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার পর্যন্ত রাজধানী ওয়াশিংটনসহ অন্তত ১৫টি রাজ্যে পাঁচ হাজার ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গত ছয় দিনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার এক বিক্ষোভকারী ও এক নিরাপত্তাকর্মীর নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার ইন্ডিয়ানাপলিসে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। পুলিশ তার বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেনি। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে শিকাগোয় ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং তাদের একজন মারা গেছেন। তবে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।

এক প্রতিবেদনে আলজাজিরা জানিয়েছে, ফ্লয়েড হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভকারীরা রোববার হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। রাস্তার পাশে থাকা প্লাস্টিক ব্যারিয়ারে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেককে আশপাশের ভবন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা এনে সেই আগুনে পোড়াতে দেখা গেছে। এর আগে শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টার দিকে হোয়াইট হাউসের পাশেই সেন্ট জোনস গির্জায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ২০০ বছর ধরে গির্জাটিতে প্রার্থনা করে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা। পরে সে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

ফিলাডেলফিয়ার একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা একের পর এক পুলিশের গাড়ি ভাঙছে। এ সময় অন্তত একটি দোকানে লুট হতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটে লিখেছেন, ‘ফিলাডেলফিয়ায় এখনই শৃঙ্খলা ফেরান। তারা দোকানে লুট করছে। এখনই আমাদের মহান ন্যাশনাল গার্ডকে ডাকুন।’

মিনিয়াপোলিসে পুলিশ শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল ফ্লয়েডকে। চলমান বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে শহরটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোববার ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন এক চালক। পরে বিক্ষোভকারীরা তাকে আটক করে পুলিশে দেয়।

মিনেসোটা রাজ্যের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের ‘অনুপ্রবেশ’ ঘটেছে বলে মনে করছেন তারা। পুলিশ এই ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ বিষয়ে বিশেষভাবে নজর রাখছে।

ডেনভারে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী মাটিতে উপর হয়ে শুয়ে ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চাপা দিয়ে রাখার এক পর্যায়ে ফ্লয়েড বলেছিলেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’। এর কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।

আটলান্টা, বোস্টন, মিয়ামি এবং ওকলাহোমা শহরেও বড় আকারে বিক্ষোভ হয়েছে। আটলান্টায় রোববার বিক্ষোভরত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর ওপর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে চীন। সাম্প্রতিক সময়ে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের অনুরূপ সহিংস বিক্ষোভে ইমেজ সংকটে পড়েছিল চীন। ট্রাম্প প্রশাসন তখন হংকংয়ের চীনবিরোধী গণতন্ত্রপন্থিদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিতে শুরু করেছেন চীনের সরকারি কয়েকজন কর্মকর্তা এবং কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম।

গত সোমবার জর্জ ফ্লয়েড নামে ৪৬ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার উপরে ফ্লয়েডকে ফেলে তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছেন এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। পরে শ্বাস বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। এই ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্লয়েড হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডেরেক চাওভিন নামে ওই শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হলেও তাদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360