ভারতে আনারসের সাথে পটকা খাইয়ে গর্ভবতী হাতি হত্যা - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
ভারতে আনারসের সাথে পটকা খাইয়ে গর্ভবতী হাতি হত্যা - Shera TV
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন

ভারতে আনারসের সাথে পটকা খাইয়ে গর্ভবতী হাতি হত্যা

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩ জুন, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

পশুপাখির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতার চরমতম নিদর্শন। প্রকাশ্যে এল কেরালায় গর্ভবতী এক হাতির ভয়াবহ মৃত্যুর কাহিনী। তার অপরাধ? সে মানুষকে বিশ্বাস করত। সেই কারণেই স্থানীয়দের দেওয়া আনারস খেতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি সে। জানত না, আনারসের মধ্যে পুরে দেওয়া হয়েছে বাজি-পটকা। তার মুখের মধ্যেই ফেটে যায় সেগুলি। এক হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে, সঙ্গে নিয়ে যায় নতুন একটি প্রাণও।

গত বুধবারের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে যখন উত্তর কেরালার মালাপ্পুরম জেলার বনবিভাগের এক আধিকারিক সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বীভৎস মৃত্যুর বর্ণনা দেন।

জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল হাতিটি, পায়ে পায়ে গ্রামে ঢুকেছিল খাদ্যের খোঁজে। সেই গ্রামেরই পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় তাকে আনারস খেতে দেয় কিছু গ্রামবাসী।


বনবিভাগের কর্মকর্তা মোহন কৃষ্ণন লিখেছেন, “সবাইকে বিশ্বাস করত সে। যখন তার মুখের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে, তখনও সে নিশ্চয়ই নিজের কথা ভাবে নি, ভেবেছে সেই সন্তানের কথা, যার জন্ম হওয়ার কথা ছিল ১৮ থেকে ২০ মাস পর।” হাতিটিকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে যে র‍্যাপিড রেসপন্স টিম ঘটনাস্থলে যায়, তারই সদস্য ছিলেন কৃষ্ণন।

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই যে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় হাতিটির জিভ এবং মুখ। অসহ্য যন্ত্রণা এবং খিদে নিয়ে সারা গ্রাম হেঁটে বেড়ায় সে। আঘাতের পরিমাণ এতটাই যে কিছু খাওয়ারও সাধ্য ছিল না তার।

তাঁর আবেগঘন পোস্টে কৃষ্ণন লেখেন, “ভেতরটা জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে, গ্রামের পথ দিয়ে ছুটছে সে, সেই অবস্থাতেও কিন্তু একজন মানুষেরও ক্ষতি করে নি সে, একটি বাড়িও ছোঁয় নি। তাই বলছিলাম, ওর ভেতরে ভালো ছাড়া আর কিছু ছিল না।”

শেষ পর্যন্ত ভেলিয়ার নদী পর্যন্ত হেঁটে যায় হাতিটি। জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে অনেকক্ষণ। দাঁড়িয়ে থেকেই মৃত্যু হয় তার। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নদীর জলে শুঁড় এবং মুখ ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে, হয়তো অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তির আশায়। কৃষ্ণনের মতে, সম্ভবত তার জখমের ওপর যাতে মাছি বা অন্য কোনও পোকা না বসে, সেই কারণেই এমনটা করে সে।

দুটি পোষা হাতির সাহায্যে তাকে নদী থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেন বনবিভাগের আধিকারিকরা, কিন্তু কৃষ্ণন লিখেছেন, “আমার মনে হয় তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করছিল। আমাদের কিছু করতে দেয় নি সে।” দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ২৭ মে বিকেল চারটের সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সে।

মৃত্যুর পর তার দেহ ট্রাকে করে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যান বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা, সেখানেই দাহ করেন তাকে।

“ওকে যোগ্য বিদায় দেওয়াটা দরকার ছিল। তাই আমরা লরিতে করে ওকে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যাই। সেখানে চিতাকাঠের ওপর শুয়েছিল সে, সেই ভূমিতে, যেখানে সে বেড়ে উঠেছিল, যেখানে সে খেলত। যে ডাক্তার ওর পোস্টমর্টেম করেন, তিনি আমায় জানান যে সে একা ছিল না। ওঁর মুখোশের মধ্যে দিয়েও বুঝতে পারছিলাম, কী কষ্ট হচ্ছে ওঁর। তাকে দাহ করলাম আমরা, তারপর মাথা ঝুঁকিয়ে শেষ সম্মান জানালাম,” লিখেছেন কৃষ্ণন।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360