ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে অর্থনীতির চাকা সচল করতে সব খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে ভারতে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশ উর্ধমুখী। জুন মাসের তিন দিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাই সত্যি হয়েছে। এখন ভারত করোনা আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। টপকে এসেছে তুরস্ক ও ফ্রান্সকে। ভারতের আগে এখন আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, স্পেন ও ইতালি। কিন্তু ভারতের উপরে থাকা অধিকাংশ দেশেরই দাবি, আক্রান্তের শিখর পেরিয়ে এসেছে তারা এবং এখন সংক্রমণ কমছে। কিন্তু ভারতে এখনও নতুন সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ফলে এই দেশগুলিকেও আক্রান্তের সংখ্যায় টপকে যাওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বুধবার সকালে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ থেকে ১ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ১১০ দিন। কিন্তু ১ লাখ থেকে ২ লাখে পৌঁছাতে সেই সময় লেগেছে মাত্র ১৫ দিন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৯০৯ জন। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৬১৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২১৭ জনের। এ নিয়ে ভারতে মোট ৫ হাজার ৮১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনার কারণে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। গুজরাতে ১ হাজার ৯২ জনের। রাজধানী দিল্লিতে মোট ৫৫৬ জন মারা গিয়েছেন করোনার ফলে। এছাড়া মধ্যপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৩৬৪, পশ্চিমবঙ্গে ৩৩৫। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (২২২), রাজস্থান (২০৩), তামিলনাডু (১৯৭)-র মতো রাজ্য।গত ৩০ জানুয়ারি কেরলে প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কলকাতার ছাড়িয়ে দূরের বিভিন্ন জেলাতেও বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। এখনও অবধি করোনায় রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ১৬৮ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯৬ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৩৫ জনের। অবশ্য দেশজুড়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হার রীতিমত আশাব্যাঞ্জক বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রখ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৭৭৬ জন। এদিন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ৩০৩ জন। পরিসংখ্যানবিদদেও তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ৫০ হাজার পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৯৮ দিন। দ্বিতীয় ৫০ হাজার অর্থাৎ মোট আক্রান্ত ১ লাখে পৌঁছানোর মেয়াদ ১২ দিন। সেখান থেকে দেড় লাখে পৌঁছেছে ৮ দিনে। আর সর্বশেষ ৫০ হাজার আক্রান্ত যোগ হয়েছে মাত্র ৭ দিনে। সংক্রমণ বৃদ্ধির এই গ্রাফ নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
সেরা নিউজ/আকিব