স্পোর্টস ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের কারণে পৃথিবী আর আগের মতো থাকবে না, সবকিছুই বদলে যাবে- এমন পূর্বাভাস মিলেছে আগেই। শুধু দৈনন্দিন জীবন নয়, নিয়ম বদলেছে ক্রীড়াঙ্গনেও। ফুটবলে বেশ কিছু নিয়ম পরিমার্জন করেছে ফিফা। একই পথে হাঁটল ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও।
আগামী ৮ জুলাই থেকে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজ দিয়ে মাঠে ফিরবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তখন থেকে যতদিন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন পর্যন্ত সময়ের জন্য ক্রিকেটের পাঁচটি নিয়মে বদল আনলো আইসিসি।
এ নিয়মগুলো হলো করোনা সাবস্টিটিউট, বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, স্থানীয় আম্পায়ার দিয়ে খেলা পরিচালনা, অতিরিক্ত রিভিউ সিস্টেমের অনুমতি এবং জার্সিতে বাড়তি লোগোর ব্যবহার।
অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে আইসিসি প্রধান নির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে উঠে এসেছে এসব নিয়মের সুপারিশ। যা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো আইসিসি। করোনাকালে ক্রিকেট খেলার মধ্যে কোন খেলোয়াড় বা সংশ্লিষ্ট মানুষদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবেই এসব নিয়ম করা হয়েছে।
করোনাকালীন সময়ে পরিবর্তিত ৫ নিয়ম
করোনা সাবস্টিটিউট
গত অ্যাশেজ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখেছে কনকাশন সাবস্টিটিউট। অর্থাৎ টেস্ট ম্যাচে কোন খেলোয়াড় মাথায় আঘাত পেলে তার পরিবর্তে নামানো হয় অন্য আরেকজন একই ধরনের খেলোয়াড়। সে নিয়মের সঙ্গে এবার যোগ হলো করোনা সাবস্টিটিউট।
নতুন এ নিয়মের আওতায় টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন কোন খেলোয়াড়ের মধ্যে যদি করোনাভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে ম্যাচ রেফারির অনুমতি সাপেক্ষে অন্য একজন খেলোয়াড়কে মাঠে নামানো যাবে। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির জন্য এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খেলোয়াড়রা ম্যাচের মধ্যে লালার মাধ্যমে বল উজ্জ্বল করতে পারবেন না। কেউ যদি অভ্যাসবশত বলে লালার ব্যবহার করে ফেলেন, তাহলে আম্পায়াররা এ বিষয়টির মধ্যস্থতা করবেন।
তবে একই কাজ বারবার হতে থাকলে পুরো দলকে আনুষ্ঠানিক সতর্কতা দেয়া হবে। প্রতি ইনিংসে একটি দল সর্বোচ্চ দুইবার সতর্কতা পাবে। এরপর থেকে বলে লালা ব্যবহার করলে ব্যাটিং দলকে দেয়া হবে ৫টি পেনাল্টি রান। বলে লালা ব্যবহার করা হলে সেটিকে ভালোভাবে মুছে তবেই খেলা শুরু করা যাবে।
স্থানীয় আম্পায়ার দিয়ে খেলা পরিচালনা
স্বাভাবিক সময়ে যেকোন সিরিজ আয়োজনে অন্তত একজন নিরপেক্ষ দেশের আম্পায়ার থাকা বাধ্যতামূলক। তবে করোনাকালীন সময়ে যেকোন দেশ চাইলে স্থানীয় আম্পায়ারদের দিয়েই ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবে। এক্ষেত্রে আইসিসিই তাদের আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিদের প্যানেলভুক্ত আম্পায়ারদের মধ্য থেকে আম্পায়ার ও রেফারি ঠিক করে দেবে।
অতিরিক্ত রিভিউ সিস্টেমের অনুমতি
করোনাকালীন সময়ে স্থানীয় আম্পায়ারদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার কারণে ভুল সিদ্ধান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে কুম্বলেদের প্রধান নির্বাহী কমিটি। এটি বিবেচনায় সব দলের জন্য বাড়তি একটি রিভিউ নেয়ার সুযোগ দেবে আইসিসি।
এতদিন ধরে প্রতি ইনিংসে টেস্টে দুই এবং ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে একটি করে রিভিউ নিতে পারত সব দল। অস্বাভাবিক এ সময়টাতে টেস্টে তিন এবং ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে নেয়া যাবে দুইটি করে রিভিয়।
জার্সিতে বাড়তি লোগোর ব্যবহার
আগামী ১২ মাসের জন্য জার্সিতে বাড়তি লোগো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে আইসিসি। তবে সেটি ৩২ স্কয়ার ইঞ্চির বেশি হতে পারবে না, যা থাকবে খেলোয়াড়দের বুকের মধ্যে। এতদিন ধরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এটি ব্যবহৃত হলেও, টেস্টে এর অনুমতি ছিল না। এছাড়া বাকি তিনটি লোগো ব্যবহারের নিয়মনীতি আগের মতোই থাকবে।
সেরা নিউজ/আকিব