অনলাইন ডেস্ক:
কুয়েত প্রবাসীদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রদূত এম এম আবুল কালাম একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করছেন। সেখানে তিনি ফেসবুক এবং ইউটিউবে সাম্প্রতিক সময়ে দূতাবাস, দূতাবাসের এক কর্মকর্তা এবং কুয়েতের আইন শৃঙ্খলাবাহনীকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু তথ্য এবং সংবাদ পরিবেশন হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যেসব ভুয়া আইডি ব্যবহার করে কিংবা বিভিন্নভাবে এগুলো প্রচার করা হচ্ছে তাদের চিহ্নিত করতে তিনি কুয়েত সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পরবর্তীতে অর্থাৎ চিহ্নিত হওয়ার পরপরই তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা (মামলাসহ অন্যান্য) নিবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন।
২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বার্তার শুরু, সমাপ্তি এবং মধ্যখানে রাষ্ট্রদূত কমপক্ষে ৩ বার করে বানাউট (বানোয়াট), মিথ্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ৩টি শব্দ (মোট ৯ বার) ব্যবহার করেছেন। ‘এর সঙ্গে সত্যে কোনো সম্পর্ক নেই’ এই লাইনটিও ৩ বার করে তার সোয়া দুই মিনিটের বার্তায়।
তবে প্রাষ্ট্রদূত একবারের জন্য ঘটনাটা কি? আকারে বা ইঙ্গিতেও কোনোভাবেই তা প্রকাশ করেননি। কি ঘটনা, কোন তথ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে নেটিজেনরা তা জানতে অনেকে দূতাবাসের অফিসিয়্যাল ফেসবুক পেজ যেখানে ভিডিও প্রচার হয়েছে, সেখানে প্রশ্ন রেখেছেন। এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও রাষ্ট্রদূত কী প্রসঙ্গে বার্তা প্রচার করলেন তা খোলাসায় অপরারগতা প্রকাশ করেন। বলেন, “আমি আমারটা বলেছি, যে যা বুঝবার বুঝে নিক। আমার টার্গেট ছিল প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি, তারা বুঝলেই চলবে।”
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
১৩ ই জুন বাংলাদেশ সময় মধ্যাহ্নে দূতাবাসের অফিসিয়্যাল ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তাটি প্রচার করার পর (সাত ঘন্টায়) ২২ হাজার মানুষ এটি দেখেছেন।
৪২২ জন শেয়ার করেছেন। ২৯৫ জন কমেন্ট বা মন্তব্য করেছেন। লাইক, ডিসলাইক বা অন্য সাঙ্কেতিক চিহ্ন দেখিয়ে নিঃশব্দে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন হাজারের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী।
স্বপন আলী নামের একজনের কমেন্ট ছিল এমন “স্যার আপনি প্রবাসিদের কাজের কথা তো কিছুই বললেন না। অনেক মানুষ সমস্যার মধ্যে আছে।বিশেষ করে পাসপোর্ট এর সমস্যা।অনেক ক্লিনিং কোম্পানির লোকদের বেতন নাই। তাদের খাবারের জন্য অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। তিন মাস যাবত ডিউটি নাই।
অনেক মানুষ দেশে যাওয়ার জন্য টিকেট কেটে ছিলো তারা এখন কি ভাবে যেতে পারবে একটুও বললেন না। আপনি কি বললেন আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না।” স্বপন আলীর কমেন্টটি ২৬ জন লাইক ও লাভ চিহ্ন দেখিয়ে সমর্থন করেছেন। নাজির ইসলাম নামের একজন লিখেছেন- “স্যার আপনার বক্তব্য শুনে অনেক কষ্ট হচ্ছে, ধিক্কার জানাই নিজকে নিজে। আপনাদের মত লোকের হাতে দায়িত্ব থাকার কারণে কিন্তু প্রবাসীরা আজ অসহায়। আপনাকে আর কি বলব, আসলে আমাদেরই কপাল খারাপ, কপাল পোড়া জাতি আমরা। আপনি প্রবাসীদের বিভ্রান্ত না হতে বলার জন্য কি দায়িত্ব পেয়েছেন? যারা প্রবাসে আছে তারা মোটামুটি ভালভাবেই জানে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা।যাই হোক জীবনের শেষবেলায় দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন, সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ” মিস্টার ইসলামের ওই কমেন্ট ২০টি লাইক পড়েছে। তবে ২৯৫ কমেন্ট বা লিখিত প্রতিক্রিয়ার মধ্য ইনামুল নামের একজনের প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে বেশ লোক পছন্দ করেছেন। তার ভাষ্যটি ছিল এমন “সত্যটা কি প্রকাশ করুন! আর কোন বিষয়ে মিথ্যা প্রকাশ করা হয়েছে সেটাই তো বুঝলাম না। মাথার উপড় দিয়া গেল! পারলে ভিডিওটা আবার বানান। বিস্তারিত বলেন, আপনি বক্তব্য দিতে গিয়ে কতবার আটকে গিয়েছেন”
এ মন্তব্যে সর্বোচ্চ ৫০টি লাইক পড়েছে। ওই ভিডিও বার্তায় আরও নেতিবাচক কমেন্ট পড়েছে। যাতে রাষ্ট্রদূতকে তীর্যক ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কুয়েতে সম্প্রতি মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য এবং মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে সিআইডির হাতে আটক ধনকুবের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বেনিফিশিয়ারিরা দূতাবাসে ঘাঁপটি মেরে বসে আছে এবং তাদের কারও প্ররোচণায় এই ভিডিও বার্তা তৈরি এবং প্রচার হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। তবে দূতাবাসের প্রতিনিধি বা পেইজ এডমিনের তরফে নেটিজেনদের সেই সব মন্তব্যের পাল্টা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি।
সেরা নিউজ/আকিব