ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন। আগামী ২৩ জুন নিউইয়র্ক স্টেট এসেম্বলি নির্বাচন উপলক্ষে শেষ মুহুর্তের নির্বাচনী কর্মব্যস্ততায় প্রার্থী ও সমর্থকরা। শেষ মুহুর্তের নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট এসেম্বলি নির্বাচনে বাংলাদেশি তরুন জয় চৌধুরী। ব্যালটে এসেম্বলি প্রার্থীদের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে জয় চৌধুরীর নাম। বাংলাদেশি কমিউনিটির কেন্দ্র হিসেবে ক্ষ্যাত জ্যাকসন হাইটস, উডসাইড, ইষ্ট এলমহার্স্ট এলাকার (ডিস্ট্রিক্ট-৩৪) হয়ে লড়াই করা এই তরুন ইতিমধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছেন বাঙালী কমিউনিটির মধ্যে।
শুধু বাংলাদেশি নয় মেধা, মনন কর্মগুন ও ন্যায্য দাবী আদায়ে মন জুগিয়েছেন সবার। তাই বাংলাদেশি, ভারতীয়, নেপালি, টিব্বতিয়ান, পাকিস্থান ও চাইনিজ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা জোট বদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে জয় চৌধুরীর পক্ষে। এরিয়া ভিত্তিক নিজস্ব টিম গঠন করে প্রতিটি ব্লকে চষে বেড়াচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী বাংলাদেশি ও সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির নেতারা।
নির্বাচনের জয় চৌধুরীর নির্বাচনী ফিল্ড কেমন জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি বলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশিদের প্রাণ কেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের এই নির্বাচনী এলাকায় প্রায় অর্ধেকের বেশী এশিয়ান কমিউনিটির বসবাস। শুধু বাংলাদেশি ভোটারই রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। প্রায় ১২ হাজার এশিয়ান কমিউনিটির এই এসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্টে জয় চৌধুরীর বিপরীতে শেতাঙ্গ ও হিস্পানিক কমিউনিটির ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তাই এশিয়ান কমিউনিটির একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয় চৌধুরীর বিজয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
অপরদিকে জয় চৌধুরীকে ইতিমধ্যেই সমর্থন জানিয়েছে (Endorsement) ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বার্নি সেন্ডার্স সমর্থক গোষ্টিসহ যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারা, নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ এশিয়ানভূক্ত সকল দেশের বৃহত্তম আঞ্চলিক সংগঠনগুলো। শুধু তাই নয় শেতাঙ্গ ও হিস্পানিক কমিউনিটির কয়েকটি সংগঠনও এসেম্বলি প্রার্থী জয় চৌধুরীকে সমর্থন করেছেন।
সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ভোটার এসোসিয়েশন (SAAVA) আহবায়ক জয় চৌধুরী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যুব ডেমোক্রেটের নির্বাচিত ট্রেজারার। এছাড়া তিনি নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া কলেজ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের দুইবারের নির্বাচিতপ্রেসিডেন্ট। স্টূডেন্ট সেমিষ্টার বেতন কমানোর দাবিতে নিউইয়র্কে বৃহৎ ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই আন্দোলনে ছাত্রদের দাবি মেনে নেন বর্তমান গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো।
করোনাভাইরাসের এই মহা দুর্যোগেও নিউইয়র্কের কয়েক লাখ ক্যাব চালকের পক্ষে বেকার ভাতার লিখিত দাবি তুলেছেন বাংলাদেশি তরুণ নেতা জয় চৌধুরী। মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য জয় চৌধুরি করোনা ভীতি উপেক্ষা করে খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন কমিউনিটির শত শত পরিবারের ঘরে।
মাত্র কয়েকমাস আগে নিউইয়র্কের জেএফকে এয়ারপোর্টের শ্রমিকদের বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। জয় চৌধুরীর এই গ্রেফতার সরাসরি সম্প্রচার করে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার নিউজ চ্যানেল গুলো। জয় চৌধুরী জিতলে, বাংলাদেশ জিতবে। এই স্লোগানেই দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশিসহ সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির সবাই এক যুগে কাজ করছেন জয় চৌধুরীর ক্যাম্পেইনে। নিউইয়র্কে মিনি বাংলাদেশ খ্যাত জ্যাকসন হাইটসে প্রতিনিধিত্ব করবে বাংলাদেশি। এই লক্ষ্যেই ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছেন এসেম্বলি মেম্বার প্রার্থী জয় চৌধুরীর কর্মী সমর্থকেরা।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালে লাগর্ডিয়া কলেজের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট হয়ে নিউইয়র্কের গভর্নরের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন জয় চৌধুরী। এরপর স্টুডেন্টস ফর হিলারী একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে হিলারী ক্লিনটনের কেম্পেইন হেডকোয়ার্টারের সাথে কাজ করেন। পরবর্তীতে উত্তর এমেরিকার সবচেয়ে বড় যুব ডেমোক্রেট শাখার কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হন। পাশপাশি তিনি দক্ষিন এশিয়ানদের অধিকার আদায়ের জন্য তাদেরকে সংগঠিত করতে থাকেন। বর্তমানে তিনি এমেরিকান আর্মিতে গোলাবারুদ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত আছেন। সদা হাস্যোজ্বল পরোপকারি এই মানুষটি তার নিজ কর্মগুনে স্থান করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়।
সেরা নিউজ/আকিব