অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, রাষ্ট্রভিত্তিক অভিজ্ঞ কেউ কয়েক মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো হ্যাক করার চেষ্টা করছে। এ অপচেষ্টা সম্প্রতি আরো বেড়েছে।
শুক্রবার (১৯ জুন) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুদূরপ্রসারী হামলার কথা প্রকাশ করেছেন স্কট মরিসন। তবে কোন দেশ এ আক্রমণ চালাচ্ছে, সে ব্যাপারে তিনি এ সময় কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, সাইবার আক্রমণকারী এ ব্যাপারে খুব উল্লেখযোগ্য ক্ষমতাসম্পন্ন।
এ সময় তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পরিশীলিতভাবে দুষ্ট এ সাইবার আক্রমণ বেড়েই চলেছে। আর এর ক্ষতিকর প্রভাবও বাড়ছে।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের নির্দিষ্ট ঝুঁকি ও বার বার করা আক্রমণগুলো সম্পর্কে সতর্ক করতে হুট করেই করা এ সংবাদ সম্মেলনে স্কট মরিসন বলেন, দেশের বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল সংস্থা এরই মধ্যে সাইবার অ্যাটাকের শিকার হয়েছে। কেবল মুষ্টিমেয় রাজ্যের পক্ষেই এমন হামলা করা সম্ভব।
এ আক্রমণ সরকারি, শিল্প, রাজনৈতিক সংগঠন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরিষেবা সরবরাহকারী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর অপারেটরসহ সব স্তরের অস্ট্রেলিয়ান সংস্থাকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
চীন, ইরান, ইজরায়েল, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের সাইবার ওয়ারফেয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
লিন্ডা রেইনল্ডস বলেছেন, এসব আক্রমণে বড় পরিসরে কোনো ব্যক্তিগত তথ্য লঙ্ঘন হয়নি।
তিনি ব্যবসায়ীক এবং অন্যান্য সংস্থাকে সর্বশেষ সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে সব ধরনের ওয়েব ও ই-মেইল সার্ভার সম্পূর্ণ হালনাগাদ করে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (প্রমাণীকরণ) নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাস মহামারির উৎস সম্পর্কে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে চীনকে ভাইরাস ‘ইনফোডেমিক’ বলায় চীন ক্ষুব্ধ হয়েছে।চীন কোনো সমালোচনা সহ্য করতে রাজি নয়। এজন্য তারা নিজেদের বিদেশনীতিতে আরো আক্রমণাত্মক হয়েছে। চীন তাদের শিক্ষার্থী এবং পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে। এরই মধ্যে মাদক পাচারের জন্য অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে চীন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রভাব খাটিয়ে ক্রমাগত অস্ট্রেলিয়ান পণ্যের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিচ্ছে চীন। ফলে অস্ট্রেলিয়ায় সাইবার অ্যাটাকের জন্য সন্দেহের তীর বেইজিংয়ের দিকেই যাচ্ছে।
মরিসন তার দেশের বিরোধী দলের নেতা এবং বিভিন্ন স্টেটের নেতাদের সাইবার অ্যাটাকের ব্যাপারে জানিয়েছেন।
কী ধরনের হামলা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেননি তিনি। তবে তিনি জানিয়েছেন যে কোনো ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে আপস করা হয়নি এবং আক্রমণগুলোর বেশিরভাগই ব্যর্থ হয়েছে।
সেরা নিউজ/আকিব