করোনা সংক্রমণে হতে পারে স্ট্রোক, বাঁচবেন যেভাবে - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
করোনা সংক্রমণে হতে পারে স্ট্রোক, বাঁচবেন যেভাবে - Shera TV
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

করোনা সংক্রমণে হতে পারে স্ট্রোক, বাঁচবেন যেভাবে

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২২ জুন, ২০২০

স্বাস্থ্য ডেস্ক:
চিকিৎসকেরা করোনা সংক্রমণ ও স্ট্রোকের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। সাধারণত বয়স্ক মানুষদের স্ট্রোক হয়, কিন্তু করোনা সংক্রমণে তরুণদেরও স্ট্রোক হতে দেখা গেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৫০ বছরের কম বয়সি অনেক করোনা রোগী স্ট্রোকে মারা গেছেন।

ফনিক্সে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি মেডিসিন নিউরোসায়েন্সেস ক্লিনিকের অন্তর্গত স্ট্রোক সেন্টারের পরিচালক জেরেমি পাইন বলেন, ‘করোনাভাইরাস মস্তিষ্কে সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার সঙ্গে স্ট্রোকের বাড়তি ঝুঁকি জড়িত।’ এখানে করোনা সংক্রমণ থেকে কিভাবে স্ট্রোক হয় তা আলোচনা করা হলো।

করোনা সংক্রমণে যেভাবে স্ট্রোক হয়

স্ট্রোকের প্রধান ধরন দুটি: ইস্কেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক। ধমনী ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে যে স্ট্রোক হয় সেটাকে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক। অন্যদিকে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ ব্যাহত হয়ে যে স্ট্রোক হয় তাকে বলে ইস্কেমিক স্ট্রোক। প্রায় ৮০ শতাংশ স্ট্রোকের উৎপত্তি রক্ত জমাটবদ্ধতা থেকে, কারণ রক্ত জমাট বাঁধলে মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না।

করোনা টেস্টে পজিটিভ তরুণদের মধ্যে স্ট্রোক হতে দেখে চিকিৎসকেরা দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নিউ ইয়র্ক সিটিতে ৫০ বছরের কম বয়সি পাঁচজন করোনা রোগীর লার্জ ভেসেল স্ট্রোক (মস্তিষ্কের বড় ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে সৃষ্ট স্ট্রোক) হয়েছে।

সান্টা মনিকাতে অবস্থিত প্রভিডেন্স সেন্ট জন’স হেলথ সেন্টারের অন্তর্গত প্যাসিফিক স্ট্রোক অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সের পরিচালক ও ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজিস্ট জেসন টারপ্লি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সম্ভবত রক্তনালীর ভেতরস্থ স্তরকে সংক্রমিত করে। এন্ডোথেলিয়াম হচ্ছে রক্তনালীর ভেতরস্থ স্তরের মসৃণ টিস্যু, যা রক্তের জমাটবদ্ধতা প্রতিরোধ করে। কিন্তু টিস্যুটি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয় যাদের সমন্বয়ে রক্ত জমাট বাঁধে। এছাড়া করোনা সংক্রমণে রক্ত জমাট বাঁধাতে পারে এমন প্রোটিনের মাত্রাও বেড়ে যায়, যাকে ডি-ডাইমার বলে।’

ডা. পাইন বলেন, ‘শরীরের সর্বত্র প্রভাব বিস্তারকারী প্রদাহজনিত রোগ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, কারণ প্রদাহ রক্তকে জমাট বাঁধতে প্ররোচিত করে। প্রদাহে ধমনীর প্লেক সক্রিয় হয়ে আরো আঠালো ও স্থির হয়।একারণে ফ্লু সিজনে স্ট্রোকের হার বেড়ে যায়। এই একই মেকানিজম করোনা রোগীদের মধ্যেও ঘটতে পারে।’ আপনি হয়তো ইতোমধ্যে জেনেছেন যে করোনা সংক্রমণেও শরীর প্রদাহিত হয়।

রক্ত জমাট জনিত স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে করোনা রোগীদেরকে রক্ত পাতলাকরণের ওষুধ দেবেন। অনেক হাসপাতালে করোনা রোগীদেরকে রক্ত পাতলাকারী ওষুধ দেয়া হয়েছে। রক্ত পাতলাকারী ওষুধ রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না অথবা বিদ্যমান রক্ত জমাটবদ্ধতাকে আরো বড় হতে দেয় না। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে অনেক করোনা সংক্রমণের কেসে এসব ওষুধ প্রয়োগ করেও কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষেত্রে বিপজ্জনক রক্তক্ষরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

তাই যেসব রোগী ঘরে অবস্থান করে করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা রক্ত জমাটের ঝুঁকি এড়াতে কিছু ঘরোয়া উপায়কে গুরুত্ব সহকারে নিতে পারেন, যেমন- প্রচুর পানি পান করা, ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ১৫-৩০ মিনিটে রোদ পোহানো, মরিচ গুঁড়ার শরবত পান করা, অলিভ অয়েল মালিশ করা, রসুন চা পান করা, কিছু ওষুধের ব্যবহার এড়িয়ে চলা অথবা চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কমিয়ে ফেলা (যেমন- জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি রক্ত জমাটের ঝুঁকি বাড়ায়), ধূমপান বর্জন করা, ট্রান্স ফ্যাট ও চিনির মতো অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা, প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া (যেমন- ব্রোকলি ও পালংশাকের মতো গাঢ় সবুজ শাকসবজি, মিষ্টি কুমড়া ও লাল ক্যাপসিকামের মতো রঙিন শাকসবজি, ফল, বিভিন্ন রকম ডাল, গোটাশস্য ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার), নিয়মিত শরীর চর্চা করা, বেশিক্ষণ বসে না থেকে কিছু সময় পরপর হাঁটাচলা করা এবং হলুদের ব্যবহার বাড়ানো।

স্ট্রোকের লক্ষণ

করোনায় সংক্রমিত হলেও কিংবা না হলেও প্রত্যেকের স্ট্রোকের লক্ষণগুলো জেনে রাখা উচিত। ডা. টারপ্লি ‘ফাস্ট (এফ,এ,এস,টি)’ অ্যাক্রোনিমটি মনে রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন, যেখানে: এফ দিয়ে ফেস ড্রুপিং বা গালের একপাশ বেঁকে যাওয়া, এ দিয়ে আর্ম উইকনেস বা কোনো বাহুতে দুর্বলতা বা ঝুলে পড়া, এস দিয়ে স্পিচ ডিফিকাল্টিস বা কথা বলতে অসুবিধা বা জড়িয়ে যাওয়া এবং টি দিয়ে টাইম টু কল বা লক্ষণগুলোর কোনো একটা দেখা দিলে জরুরি নম্বরে কল করতে হবে বোঝায়। এছাড়া মাথাঘোরা বা ভারসাম্য ধরে রাখতে সমস্যা এবং এক বা উভয় চোখে দেখতে সমস্যাও স্ট্রোকের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। স্ট্রোকের লক্ষণ প্রকাশ পেলে যত দ্রুত সম্ভব জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে হবে। স্ট্রোক হলো ঘরে আগুন লাগার মতো- আগুন যেমন নেভাতে দেরি করলে বেশি ক্ষতি হয়, স্ট্রোকের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও তেমন।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360